প্রতীকী ছবি।
‘কাটমানি’ নিয়ে অসন্তোষ এতদিন পুরুলিয়ায় সীমাবদ্ধ ছিল পোস্টার, লিফলেট আর স্মারকলিপিতে। এ বার কাটমানি নেওয়ার জন্য সরাসরি অভিযোগ জমা পড়ল থানায়।
মানবাজার থানার বামনি গ্রামের সাত তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে এলাকার সাত বাসিন্দা আবাস প্রকল্পে তাঁদের কাছ থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ জমা করলেন থানায়। অভিযোগপত্রে ওই সাত জনের রাজনৈতিক পরিচয়ের উল্লেখ না থাকলেও তাঁদের নিজের দলের কর্মী বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের বামনি-মাঝিহিড়া অঞ্চল সভাপতি মহাদেব হালদার। শনিবার তিনি দাবি করেন, ‘‘আমাদের দলের সাত কর্মীর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।’’
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী গ্রিভান্স সেল তৈরি করেছেন। অভিযোগ থাকলে সেখানে জানাক। এটা বিজেপির পরিকল্পিত চক্রান্ত ছাড়া কিছু নয়।’’ যদিও বিজেপি নেতৃত্ব চক্রান্তের অভিযোগ মানতে চাননি। মানবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত জেনারেল ডায়েরি করে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পাওয়া গেলে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হবে।
মানবাজারের কয়েকজন তৃণমূল নেতা-নেত্রীর নামে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি পোস্টার ও তৃণমূলের পাল্টা লিফলেট ছড়ানো নিয়ে বিতর্ক চলছে। তারই মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় বামনি গ্রামের এক দল বাসিন্দা থানায় গিয়ে কাটমানি নিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ায় নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বামনি গ্রামের মুটুক সহিস, যাদব মাহাতো, রেবতী মাহাতো, কৃষ্ণপদ রুহিদাস, বিলাসীবালা মাহাতো, নমিতা রুহিদাস ও গুলাপী রুহিদাসেরা অভিযোগ করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে প্রথম দফার টাকা পাওয়ার পরে স্থানীয় নেতারা মাথাপিছু পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। না হলে দ্বিতীয় দফার টাকা দেবে না বলেছিল। বাধ্য হয়ে ওঁদের হাতে টাকা তুলে দিই।’’
অভিযুক্তেরা মন্তব্য করতে চাননি। তাঁদের হয়ে মহাদেববাবু অভিযোগ করেন, ‘‘শুক্রবার বামনি-মাঝিহিড়া পঞ্চায়েতে বিজেপি স্মারকলিপি দেওয়ার পরেই থানায় অভিযোগ হল! এতদিন কেন অভিযোগ করা হয়নি?’’
বিজেপির মানবাজার মণ্ডলের সভাপতি বাণীপদ কুম্ভকার দাবি করেন, ‘‘আগে অভিযোগ জমা করতে ওঁরা ভরসা পাচ্ছিলেন না। ওখানে আমাদের সংগঠন মজবুত হওয়ায় এবং পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দেওয়ার পরেই তাঁরা অভিযোগ জানাতে সাহস পেয়েছেন।’’ বিডিও (মানবাজার ১) নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘ব্লকের গ্রিভেন্স সেলে এই ধরনের কোনও অভিযোগপত্র জমা পড়েনি। তবে ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’