মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
দলের জেলা সভাপতি গরু পাচার মামলায় জেলে। জেলায় সংগঠনে ধাক্কা লেগেছে। এই অবস্থায় সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই বীরভূমে আসছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল থাকতে পারবেন না, তেমনটা ধরে নিয়েই জেলার নেতারা প্রস্তুত হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য বলে দল সূত্রের খবর।
জেলা প্রশাসনের বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, বীরভূম সফরে এসে ১১ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় থাকার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। বিভিন্ন জেলায় মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করলেও বীরভূমে এখনও তা হয়নি। সূত্রের খবর, জেলা সফরে এসে বোলপুরে দু’দিন প্রশাসনিক প্রশাসনিক বৈঠক সহ একাধিক কর্মসূচি রয়েছে মমতার। সে নিয়ে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে ইতিমধ্যেই তৎপরতাও শুরু হয়েছে।প্রস্তুতি চলছে সব রকম ভাবে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফর নিয়ে প্রশাসনের কর্তারা প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছেন না।
প্রসঙ্গ, গত ১১ অগস্ট গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আপাতত আসানসোল জেলেই রয়েছেন তিনি। তাঁকে গ্রেফতারের কয়েক দিনের মধ্যে বোলপুরে বিজেপির মহামিছিল থেকে তৃণমূলকে করা ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শুক্রবারও খয়রাশোলের জনসভা থেকে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে বিজেপি তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানোর চেষ্টা করছে বীরভূমে।
অন্য দিকে, জেলা সভাপতির অনুপস্থিতিতে দলের রণকৌশল কী হবে, তা নিয়ে নানা পদক্ষেপ করেছে জেলা তৃণমূল। আর এই আবহে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে এলে তা অন্য মাত্র পাবে বলে মনে করছেন জেলা নেতৃত্ব। তাঁরা মনে করছেন, জেলা সফরে দলনেত্রী এলে কর্মীরা আগের থেকে অনেকটাই উজ্জীবিত হবেন। তাঁদের মনোবল আগের চেয়ে অনেক বাড়বে। এ বিষয়ে জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা দলের মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেলার মাথা এই সময় জেলায় নেই, তাই নেতা-কর্মীদের কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে। দলনেত্রী যদি এই সময় আসেন, তা হলে কর্মীরা অনেকটাই উজ্জীবিত হবে।” একই কথা শোনা গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহের মুখে। তিনি বলেন, “কর্মীরা উজ্জীবিত রয়েছেন। তবে দলনেত্রী এই আবহে এলে তাঁদের মনোবল আরও বাড়বে বলে আমাদের আশা।”
অনুব্রতকে গ্রেফতার করার ক’দিন পরেই প্রকাশ্যে তা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেষ্টর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘কী করেছে কেষ্ট, কেন গ্রেফতার করা হল ওকে?’ তবে আপাতত জেল হেফাজতেই বীরভূমের জেলা সভাপতি।কবে তিনি জেল থেকে ছাড়া পাবেন, তা জেলা তৃণমূল নেতারা জানেন না। ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। ফের যদি তাঁর জেল হেফাজত হয়, তা হলে সম্ভবত এই প্রথম দলনেত্রীর বীরভূম সফরে তাঁর সঙ্গী হতে পারবেন না অনুব্রত মণ্ডল।