কালীঘাটে বৈঠক করবেন তৃণমূলনেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আজ, শুক্রবার কালীঘাটে বৈঠক করবেন তৃণমূলনেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও থাকার কথা। অনুব্রতহীন বীরভূমে দল পরিচালনা নিয়ে সেই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে জেলা তৃণমূল সূত্রে দাবি। বৈঠকে কোনও ক্ষোভের কথাও জেলার নেতারা জানান কি না সেই প্রশ্নও আসছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে ডাক পেয়েছেন বিধায়ক, সাংসদ, জেলা সভাপতি, শাখা সংগঠনের প্রধানেরা। মনে করা হচ্ছে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাওয়ার আগে দল কীভাবে প্রস্তুত হবে, কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করবেন সে বিষয়ে দিকনির্দেশ বা রূপরেখা তৈরি হতে পারে। ওই বৈঠকে যোগ দেবেন দলের ১০ বিধায়ক ও দুই সাংসদ।
বৈঠকে বীরভূম নিয়ে আলোচনা হবে কি না তা নিয়ে জেলা তৃণমূলের অন্দর থেকে দু’টি মত সামনে আসছে। দলেরই এক পক্ষ মনে করছেন, গোটা রাজ্যের বাছাই নেতাদের যেখানে ডাকা হয়েছে সেখানে কোনও জেলার আলাদা গুরুত্ব পাওয়ার কথা নয়। সাগরদিঘিতে সংখ্যালঘুপ্রধান এলাকায় উপনির্বাচনে হেরে যাওয়া, দূর্নীতির অভিযোগে যেভাবে বিরোধীরা আক্রমণ করছে তাতে মোটের উপর নেতাদের চলার পথই ঠিক করে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে অন্য পক্ষের মতে, বীরভূমের সঙ্গে অন্য জেলাকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। কারণ জেলবন্দি অনুব্রতকে যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাওয়া যাবে না, তা কার্যত নিশ্চিত। সম্প্রতি বোলপুরের রাঙাবিতানে জেলার বাছাই নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অনুব্রতহীন বীরভূমের কোর কমিটির সদস্যা সংখ্যা চার থেকে বাড়িয়ে সাত করে দেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনও অবশ্য অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যায়নি ইডি। তাই ‘কেষ্টদা’-র রাজ্যে থাকা আর না থাকা তফাত গড়ে দিতে বাধ্য বলে দাবি দলের অনেক নেতার।
সেই সঙ্গেই দলের একাধিক নেতা মনে করাচ্ছেন, বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিংহ, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দ্রনাথ সিংহ ও দুই সাংসদ অসিত মাল ও শতাব্দী রায়ের সঙ্গে কোর কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন অনুব্রতের বিরোধী শিবিরের বলে পরিচিত কাজল শেখ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জেলা দেখবেন জানিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে কোথাও কোর কমিটির সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব সামনে এসেছে বলে দাবি দলেরই কর্মীদের অনেকের। কাজল নিজেই ‘কেন কোর কমিটির বৈঠক ডাকা হল না’-র মতো একাধিক মন্তব্য করেছেন। দলের বৈঠক ছেড়েও কাজলের চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোর কমিটির এক সদস্য সেই সমন্বয়ের অভাবের কথাও মানছেন। তিনি বলছেন, ‘‘কাজল শেখের কিছু কাজে নেতাদের অস্বস্তি হচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। হতে পারে সংগঠন নিয়ে আলোচনার ফাঁকে এই প্রসঙ্গ ছুঁয়ে যেতে পারেন নেতারা। কারণ বীরভূমে যে সাতজনকে নিয়ে কোর কমিটি, তাঁদের মধ্যে ৬ জনই এ দিন কালীঘাটে হাজির থাকবেন বৈঠকে।’’
কাজল বলছেন, ‘‘দলে দিদিই শেষ কথা। আগামী দিনে চলার পথ কী হবে সেটা ঠিক করতে সাংসদ বিধায়কদের ডাকা হয়েছে। তাঁরা যে নির্দেশ শুনে আসবেন সেই নির্দেশ মেনেই দল চলবে।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আমার সঙ্গে কোর কমিটির সদস্যদের কারও সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব কে বলল?’’