ফাইল চিত্র।
মহম্মদবাজারে প্রস্তাবিত ডেউচা পাঁচামি কয়লা খনি গড়ায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তা আগেও একাধিকবার স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার আবার সে কথা জানিয়ে দিলেন তিনি।
এ দিন পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড় শিল্পতালুকে একটি কারখানার শিলান্যাস করতে এসে মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত কয়লা খনি গড়া নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লাখনি দেউচা-পাঁচামিতে আমরা তৈরি করছি। প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে। তাতে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, আগামী একশো বছরে বাংলায় বিদ্যুতের ঘাটতি হবে না। দু’-তিন বছরের মধ্যে কাজটা হয়ে গেলে, বিদ্যুতের দাম কমে যাবে।” মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘অনেক শিল্পপতিরা বলেন পাই না পাই না। তার কারণ আমার এখানে কিনতে হয়। নিজে যেদিন তৈরি করতে পারব সে দিন আমি অনেক সুবিধা দিতে পারব।’’
এ দিনই বোলপুরের শ্রমিক ভবনের উদ্বোধনে এসে শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নাও বলেন, ‘‘ডেউচা পাঁচামি কয়লা খনি গড়ে উঠলে এলাকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থান যেমন হবে তেমনই তাঁদের যে সমস্ত সমস্যাগুলি রয়েছে তারও দ্রুত সমাধান করা হবে। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী নিজে দায়িত্ব নিয়েছেন।’’ খনি গড়া হলে যে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে কিছু হবে না সেটাও ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ের জন্য যে জমি, তা সরকারের কাছে আছে। পুনর্বাসন প্যাকেজ তৈরি। চাকরি, বাড়ি, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, রাস্তা করে দেব। কোনও অসুবিধা নেই।’’
মহম্মদবাজারের ব্লকের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের যে ১১টি মৌজার মাটির নীচে সঞ্চিত ২১০ কোটি টন কয়লা একক ভাবে তোলার অধিকার পেয়েছে রাজ্য। প্রস্তাবিত প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জমিতে বসবাসকারী পরিবারগুলিতে সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট সমীক্ষা জমা পড়েছে। খনি গড়ায় নোডাল এজেন্সি পিডিসিএল। তবে কী শর্তে জমি নেওয়া হবে তা নিয়ে দোলাচল রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সে জন্য সরকার প্রাথমিক ভাবে সরকারি জমিতে কাজ শুরু করতে চাইছে। তবে সরকারি সব জমি একত্রিত ভাবে নেই। একলপ্তে কতটা জমি হলে কাজ শুরু করা যায় সেটা মাটির নীচে কোথায় কত কয়লা আছে সেটা জানতে ড্রিল করে প্রাপ্ত সমীক্ষার পরই স্থির হবে। সেই কাজ শুরু করার পথে এগোচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি নেওয়া হলেও কাউকে যে বঞ্চিত করা হবে না বলেও সেটাও পানাগড়ে এ দিন স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্প খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে। তার জন্য আমার সব রকম ভাবে প্রস্তুত।”