মালিয়াড়া রাজবাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের রীতি মেনে প্রতিপদ তিথিতেই দেবী আসেন মালিয়াড়া রাজবাড়িতে। আগমনীর আগমনের সাথে সাথে শুরু হয়ে যায় রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। তবে সময়ের সঙ্গে ফিকে হয়েছে রাজ পরিবারের পুজোর আতিশয্য। নিয়ম, নিষ্ঠা আর উপাচার কোনও খামতি নেই।
এক সময় মালিয়াড়া রাজত্ব ছিল উত্তরের দামোদর নদ থেকে দক্ষিনে শালী নদী পর্যন্ত। কথিত আছে ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মুঘল বাদশা আকবরের অনুমতিতে কনৌজ থেকে ঘোড়া ছুটিয়ে মালিয়াড়ায় এসে উপস্থিত হন কান্যকুব্জ ব্রাহ্মণ দেওধর অধুর্য। সে সময় দামোদর তীরবর্তী মালিয়াড়া গ্রামে ছিল একশ্রেনির জলদস্যু এবং ডাকাতদের বসবাস। নিজের নিপুণ রণকৌশলে ডাকাত-জলদস্যুদের হারিয়ে নিজের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেন দেওধর অধুর্য। রাজত্ব প্রতিষ্ঠার পরে পরেই রাজবাড়িতে শুরু হয় দেবী আরাধনা।
প্রাচীন রীতি মেনে আজও প্রতিপদ তিথিতে রাজবাড়ির অন্দরমহলে দেবী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে শুরু হয় দুর্গাপুজো। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত একটানা চলে যজ্ঞ। তন্ত্রধারক-সহ মোট তিন জন রাজ পুরোহিত পুজোপাঠ পরিচালনা করেন। বাজনা বাদক থেকে শুরু করে পুজোর ফুল সংগ্রাহক— সকলেই বংশ পরম্পরায় রাজবাড়ির পুজোয় নিয়োজিত থাকেন। রাজবাড়ির দুর্গাপ্রতিমা অষ্টধাতুর হওয়ায় তা কখনও বিসর্জন করা হয়না। পুজো শেষ হলে দেবী মুর্তি নিয়ে যাওয়া হয় রাজবাড়ির আরেকটি মন্দিরে। সেখানেই বছরভর নিত্যপুজো হয় দেবীর।