Education

ভাঙা ঘরেই লাভলির স্বপ্ন

পুরুলিয়ার ঝালদা শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পাটঝালদা গ্রামে বাড়ি লাভলি মুখোপাধ্যায়দের। এ বছর ঝালদা গার্লস স্কুল থেকে ৫৬৯ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করে নজর কেড়েছে সে। বছর চারেক আগে বাবা মারা গিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০৫:০৮
Share:

জীর্ণ বাড়ির সামনে লাভলি মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

গ্রাম ঢুকতেই চোখে পড়বে ভাঙাচোরা জীর্ণ বাড়িটা। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ওই বাড়ির কৃতী মেয়ে লাভলি।

Advertisement

পুরুলিয়ার ঝালদা শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পাটঝালদা গ্রামে বাড়ি লাভলি মুখোপাধ্যায়দের। এ বছর ঝালদা গার্লস স্কুল থেকে ৫৬৯ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করে নজর কেড়েছে সে। বছর চারেক আগে বাবা মারা গিয়েছেন। মা লক্ষ্মীদেবী পরিচারিকার কাজ করে সামান্য টাকা পান। তাতে কোনও রকমে খাওয়া-পরা চলে। লাভলির ভাই শুভাশিস ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া। দু’জনের পড়ানোর খরচ জোটাতেই হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। মেয়ে ভাল ফল করলেও লক্ষ্মীদেবীর চোখে জল।

তিনি বলেন, ‘‘এর পরের পড়ার খরচ জোটাব কী করে? সারা মাস হাটুভাঙ্গা খাটনির পরে, হাতে তো সামান্য টাকা আসে। সেটা দিয়ে সংসারের বোঝা ঠেলব, নাকি ওদের পড়াব?’’

Advertisement

মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় ডুবে থাকা লক্ষ্মীদেবী বলেন, ‘‘প্রশাসন যদি একটু পাশে দাঁড়ায়, তা হলে মেয়েটা বড় হতে পারে। অন্তত বিধবা ভাতার ব্যবস্থাটুকুও যদি হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েতে আবেদন করেও মেলেনি ভাতা। বিডিও (ঝালদা ১) রাজকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘আবেদন কী পর্যায়ে আছে জানি না। আমার দফতরে এসে আবেদন করলে নিজে গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখব।’’ তিনি জানিয়েছেন, শীঘ্রই লাভলিদের বাড়ি যাবেন। বাড়ির সংস্কারের ব্যাপারে কিছু করা যায় কি না, সেটাও দেখা হবে।

লাভলি বলে, ‘‘ইচ্ছে আছে, বড় হয়ে শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু সে ইচ্ছে পূরণ হবে কি না জানি না।’’ ঘরের চাল নুয়ে এসেছে। মনে হয়, যখন তখন খসে পড়ে যেতে পারে। সেখান থেকেই অঙ্ক, ইংরেজি-সহ মোট পাঁচটি বিষয়ে ‘লেটার’ নম্বর নিয়ে পাশ করেছে লাভলি। মেধাবী মেয়েটি জানায়, পড়ার কোনও বাঁধাধরা সময় ছিল না। ছিল না সুযোগও। বাড়ির কাজ গুছিয়ে যখনই ফুরসত মিলত, পড়তে বসে যেত। স্থানীয় দুই শিক্ষক পড়া বুঝিয়ে দিতেন।

লাভলির সেই শিক্ষক তরুণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও তীর্থসলিল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মেয়েটি বরাবরই পড়াশোনায় খুব ভাল। পরবর্তী পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যেতে সাহায্যের বড় দরকার।’’

উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement