লড়াকু: দিয়া ও অর্ক। নিজস্ব চিত্র
কেউ হতে চায় কলেজ শিক্ষক। কেউ কৃষিবিদ। কিন্তু স্বপ্নপূরণের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থাভাব। কী করে ছেলেমেয়েদের স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে দেবেন তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না মা-বাবাও।
এ বারে সাঁইথিয়া হাইস্কুল থেকে ৪৯০ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে স্থানীয় পাঞ্জনা গ্রামের দিয়া মণ্ডল। লাভপুরের ভালকুটি হাইস্কুল থেকে ৬২৯ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছিল সে। বিশ্বভারতীতে ইংরেজি অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করে কলেজ শিক্ষক হতে চায় দিয়া। কিন্তু কী করে তা সম্ভব হবে ভেবে পাচ্ছেন না বাবা ভরতচন্দ্র মণ্ডল। যৎসামান্য জমি চাষ করে একমাত্র মেয়ের লেখাপড়া-সহ ৪ সদস্যের সংসার চলে। তাঁর উদ্বেগ, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পড়াতেই হিমসিম খেতে হয়েছে। এরপর কী করে মেয়েকে পড়াবো ভেবে পাচ্ছি না।’’ দিয়া বলছে, ‘‘প্রয়োজনে গৃহশিক্ষকতা করেও পড়া চালিয়ে যেতে চাই।’’
একই জেদ লাভপুরের মিরিটির অর্ক মণ্ডলেরও। সেও এ বার কীর্ণাহার শিবচন্দ্র হাইস্কুল থেকে ৪৫৯ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে৷ ৫৯৭ নম্বর নিয়ে ওই স্কুল থেকেই মাধ্যমিক পাশ করেছিল সে। কৃষিবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে কৃষিবিদ হতে চায় সে। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণে তারও বাধা অর্থাভাব। তার বাবা সুখেন মণ্ডল কীর্ণাহারের একটি কাপড়ের দোকানে সেলসম্যানের কাজ করেন। সেই রোজগারের উপরে নির্ভর করেই ছেলের পড়াশোনা ও পাঁচ সদস্যের সংসার চলে। সুখেনবাবু বলছেন, ‘‘এতদিন মালিক ও অনেকের সহযোগিতায় কোনও রকমে ছেলেকে পড়াতে পেরেছি। এরপর কী হবে ভেবে পাচ্ছি না।’’ অর্ক বলছে, ‘‘আমাকে পড়াতে গিয়ে পরিবারকে অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সবার মুখে হাসি ফোটাতে চাই।’’