পুকুরে ফেলা হয়েছে পতাকা। —নিজস্ব চিত্র
নির্বাচনের উত্তাপ বাড়তেই বিরোধীদের উপরে নানা ভাবে চাপ বাড়ানোর অভিযোগও উঠতে শুরু করল শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এমন দু’টি পৃথক ঘটনা ঘটেছে জেলার দুই প্রান্তে, সিউড়ি ও সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায়। দু’টিতেই অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকেই। এক দিকে, তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দলের হয়ে প্রচার চালানো যাবে না— এই হঁশিয়ারি দিয়ে সিপিএমের এক লোকাল সম্পাদককে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় ঘটনায় গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষে সিপিএম প্রার্থীর সমর্থনে থাকা পতাকা খুলে নেওয়া ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলায় অভিযুক্ত সেই তৃণমূলই। শাসকদল অভিযোগ অস্বীকার করলেও ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বামেরা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পদুমা অঞ্চলের বসহরি গ্রামে। তার কয়েক ঘণ্টা পরে গভীর রাতে দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সিউড়ি ২ ব্লকের বাঁশরা গ্রামে। সিপিএমের নিগৃহীত পদুমা লোকাল সম্পাদক শেখ আলিমুদ্দিনের অভিযোগ, ‘‘দলীয় কাজ সেরে ঘোগা গ্রামে থেকে মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলাম। বসহরিতে একটি জায়গায় অপেক্ষা করছিল এলাকার চার তৃণমূল দুষ্কৃতী। তাঁরা আমার পথ আটকে হুমকি দেয়, এখানে কোনও ভাবেই অন্য দলের হয়ে প্রচার চলবে না। গলা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় আমাকে। প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি চলতে থাকে। মোটরবাইকটি পড়ে গলে টুলবক্সের মধ্যে থাকা একটি ব্যাগও ছিনিয়ে নেয় ওরা।’’ ওই ব্যাগে সামান্য টাকা, দলীয় কাগজপত্র ও চাবি ছিল। ঘটনার পরে তিনি দুবরাজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অন্য দিকে, সিপিএমের সিউড়ি জোনাল সম্পাদক দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, সাঁইথিয়া বিধানসভার অন্তর্গত বাঁশরা গ্রামে দলীয় প্রার্থী ধীরেন বাগদির সমর্থনে পোস্টার ও ফেস্টুন ছিল। ছিল সিপিএম ও কংগ্রেস উভয় দলের পতাকাও। কিন্তু, শুক্রবার গভীর রাতে তৃণমূলের লোক জন সেই সব পতাকা খুলে নেয়, ছিঁড়ে ফেলা হয় ফেস্টুনও। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় দু’টি পুকুরের জলে দুই দলের পতাকা পড়ে থাকতেও দেখা গিয়েছে। সিউড়ি থানার পাশাপাশি অনলাইনে নির্বাচন কমিশনের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছে বামেরা।
যদিও দু’টি অভিযোগই অস্বীকার করেছে শাসকদল। তৃণমূলের দুবরাজপুর ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্রের দাবি, ভিত্তিহীন অভিযোগ। এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। প্রায় একই সুর তৃণমূলের সিউড়ি ২ ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামেরও। পুলিশ ও জেলা নির্বাচন দফতেরের আধিকারিকেরা শনিবার জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।