তারাপীঠের ভরা সভায় যে বাম শরিক নেতাকে কান ধরে ওঠবোসের নিদান দিয়েছিল তৃণমূল। মঙ্গলবার সেই তাঁকেই দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে আপন করে নিলেন শাসক দলের জেলা সভাপতি। জেলা পরিষদের প্রাক্তন জেলা সহ-সভাধিপতি তথা ফরওয়ার্ড ব্লক জেলা কমিটির সদস্য নিতাই মাল যোগ দিলেন তৃণমূলে!
বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। নিতাইবাবু বলেন, “উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল হতে তৃণমূলে যোগ দিলাম।” তৃণমূল সূত্রে খবর, দিন কয়েক ধরে রামপুরহাট দু’নম্বর ব্লকের সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায় এবং পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন নিতাইবাবু। সংশ্লিষ্ট ব্লক নেতৃত্ব বিষয়টি জেলা সভাপতিকে জানায়। অনুব্রতের কাছে সবুজ সংকেত পেয়ে, মঙ্গলবার সদলবলে বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে তাঁদের নিয়ে আসেন তৃণমূলের রামপুরহাট ব্লক নেতৃত্ব। নিতাইবাবু সঙ্গে এ দিন সাহাপুর অঞ্চলের ফব-র সদ্য প্রাক্তন সম্পাদক অষ্টম মণ্ডল এবং অনুগামীরা ছিলেন। নিতাইবাবু বলেন, ‘‘সাহাপুর অঞ্চলের সম্পাদক অষ্টমবাবু এবং হাজার দুয়েক কর্মী-সমর্থক নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ফব ছেড়ে নিতাই মাল এবং তাঁর অনুগামীরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক দীপক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নিতাইদা আমাদের দলের একজন ভালো কর্মী ছিলেন। দলের অবশ্যই ক্ষতি হবে। তবে কিসের প্রলোভনে উনি তৃণমূলে গেলেন সেটা প্রকাশ করে গেলে ভালো হতো।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ দীর্ঘ দিন নিতাই মালের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তিনি জানান, এই নিতাই মালকে তারাপীঠের সভায় তৃণমূলের নেতারা কান ধরে ওঠ বোস করার নিদান দিয়েছিলেন। তখন তারাপীঠে বড় মিছিল করে এলাকাবাসী নিতাই মালের পাশে ছিলেন। আজকে নিতাই মাল তৃণমূলে যোগদান করে এলাকাবাসীর কাছে নিজের মাথা নিজেই হেঁট করলেন।’’ আরসিপিআই-এর জেলা সভাপতি কামাল হাসানও দীর্ঘ দিন নিতাই মালের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘নিতাই মাল বরাবরই কেবলমাত্র পদের জন্য স্বার্থান্বেষী, নীতিহীন রাজনীতি করতেন। আজকে তাঁর তৃণমূলে যোগদানে সেটাই প্রমাণিত হল।’’