প্রতীকী ছবি।
দাঁড় করিয়ে, ধরে ধরে প্রশ্ন করা হবে। বিধানসভা ভিত্তিক ওই কর্মী সম্মেলনে বুথ সভাপতিদের প্রশ্ন করবেন জেলা সভাপতি নিজেই। যুতসই উত্তর না দিতে পারলে তখনই সরানো হবে সেই বুথ সভাপতিকে। সোমবার সিউড়ি রবীন্দ্রসদন হলে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের এই নির্দেশের কথা মঞ্চে জানান জেলার সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ।
১৫ নভেম্বর থেকে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন শুরু করতে চলেছে জেলা তৃণমূল। ফেব্রুয়ারি মাসের সাত তারিখ পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় চার মাস চলবে ওই সম্মেলন। বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠনকে মজবুত করার লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা বলে তৃণমূলের অন্দরের ব্যাখ্যা। লোকসভা ভোটের আগে বুথভিত্তিক সভাতেও বুথ সভাপতিদের উঠিয়ে নানা জিনিস জানতে চাওয়া হয়েছিল। এ বারও একই রকম ভাবে নানা প্রশ্ন করা হবে। তবে যুতসই উত্তর না পেলে সরিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি আগে শোনা যায়নি।
লোকসভা ভোটে জেলার দুটি আসনে তৃণমূল জিতে গেলেও সমানে টক্কর দিয়েছিল বিজেপি। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট দেখে চিন্তায় জেলা নেতৃত্বও। এই অবস্থায় বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল স্তরের সংগঠনে নজর দিতে চাইছে শাসক দল। বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে সে কথাই স্পষ্ট করে দেওয়া হল। স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়, বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট বিধানসভার প্রতিটি বুথ থেকে ওই বুথের সভাপতি-সহ ১০ জনকে আসতেই হবে। ওই ১০ জনের মধ্যে ছ’জন থাকবেন পুরুষ এবং চার জন মহিলা।
বিজয়া সম্মিলনীর শুরুতে কাশ্মীরে জঙ্গিদের হাতে নিহত পাঁচ বাঙালি শ্রমিকদের উদ্দেশে দু’মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। তার পরে বলতে উঠে অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘জেলার পক্ষ থেকে এটা পরিষ্কার বলে দেওয়া হচ্ছে যে আগামী চার মাসের কর্মসূচি (নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি) জেলা থেকে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে আমরা বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন শুরু করছি। এটাই জেলা সভাপতির নির্দেশ।’’
১৫ তারিখ থেকেই কেন? সহ সভাপতির জবাব, ‘‘এই ১০ দিন পড়াশোনা করতে হবে। সেই হোমওয়ার্ক থেকেই বুথ সভাপতিদের প্রত্যেককে ঠিক উত্তর দিতে হবে। যদি কেউ পড়াশোনা না করে আসেন এবং সম্মেলনে সভাপতির প্রশ্নের উত্তর বা কোনও উত্তর দিতে না পারেন তা হলে ‘অন দ্য স্পট’ সরিয়ে দেওয়া হবে।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্মেলনে লোকসভা ভোটে কোন কোন বুথে শাসক দল পিছিয়ে ছিল, কেন পিছিয়ে ছিল, আগামী বিধানসভা ভোটের আগে ওই বুথের কী অবস্থা সব কিছু নিয়েই আলোচনা হবে। কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বক্তব্যে বলেন, ‘‘সভায় শুধু মাঠ ভরালে চলবে না। মানুষকে দলমুখী করার জন্য উৎসাহ দিতে হবে। এখন খাদ্যসাথী, আবাস যোজনার কাজ চলছে। মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য দল গঠন করে বাড়ি বাড়ি যেতে হবে।’’ এ দিনের অনুষ্ঠানে দুই মন্ত্রী, বিধায়করা ছাড়াও ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েতের প্রধান, শহর সভাপতি, পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধানরা ছিলেন।