কুড়মি সমাজকে তফশিলি উপজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দিলেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। এক দিকে দিল্লিতে গিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা, অন্য দিকে জঙ্গলমহল জুড়ে আন্দোলন— দাবি আদায়ে এ বার জোড়া কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। আগামী ২০ অগস্টের বৈঠকে আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত হবে বলে সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত মাহাতো বলেন, ‘‘ওই বৈঠকে ঝাড়খণ্ড ও ওডিশার প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’’
অজিতবাবু জানান, গত সপ্তাহে সংগঠনের ২৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী জুয়েল ওরাংয়ের সঙ্গে দেখা করেছে। পাশাপাশি দাবি নিয়ে তাঁরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী, তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায়, তৃণমূল সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতো, বিজেপি সাংসদ বিদ্যুৎবরণ মাহাতো, ওডিশার বেজেডি সাংসদ রবীন্দ্র জেনার সঙ্গে দেখা করেছেন।
কুরমিদের তফশিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করার দাবি জোরাল হয় ২০১৫ নাগাদ পুরুলিয়া ১ ব্লকের ডুড়কুর একটি সম্মেলন থেকে। ওই সম্মেলনের আয়োজন করেছিল পূর্বাঞ্চল কুড়মি সমাজ। যদিও পরে ওই সংগঠন থেকে বেরিয়ে আদিবাসী কুড়মি সমাজের ছাতার তলায় এসে কিছু নেতা কর্মী আলাদা ভাবে আন্দোলন শুরু করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে আদিবাসী কুরমি সমাজের আন্দোলনের জেরে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় দিনভর স্তব্ধ হয়ে পড়ে রেল চলাচল। অজিত মাহাতো বলেন, ‘‘এ বার আমরা রাস্তা রোকো আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ১২ ঘণ্টা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম— এই চার জেলায় রাস্তা রোকো আন্দোলন হবে। আন্দোলনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডহর ছেঁকা’।
গত এপ্রিলে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় সভা করতে এসেছিলেন। তখন আদিবাসী কুরমি সমাজের একটি প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অজিতবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে ন। প্রশাসনিক সভা থেকে সেই সময়ে তিনি কুড়মি উন্নয়ন বোর্ড গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই বোর্ড গঠনের বিষয়টি এখন কোন পর্যায়ে, সেটাই আমরা জানি না।’’