Indian Railways

লগ্ন পেরিয়ে যাবে! ট্রেন দেরি হওয়ায় রেলমন্ত্রীকে এক্স করাতেই যুবকের বিয়ে বাঁচাতে ব্যবস্থা নিল রেল

মুম্বই থেকে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে হাওড়ায় আসছিলেন তাঁরা। হাওড়া থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেস ধরে অসমে বিয়ে করতে যাওয়ার কথা ছিল চন্দ্রশেখরের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৫
Share:

মুম্বই থেকে ট্রেনে হাওড়া হয়ে অসম যাচ্ছিলেন চন্দ্রশেখর ওয়াগ নামে এক যুবক। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মুম্বই থেকে ট্রেনে অসমের সরাইঘাটে বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন চন্দ্রশেখর ওয়াগ। সঙ্গে বরযাত্রী ৩৪ জন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন আবার বয়স্ক। মুম্বই থেকে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে হাওড়ায় আসছিলেন তাঁরা। হাওড়া থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেস ধরে অসমে বিয়ে করতে যাওয়ার কথা ছিল চন্দ্রশেখরের।

Advertisement

নির্ধারিত সময়ে মুম্বই থেকে ছাড়ে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস। বরযাত্রীরা সকলেই হাসিঠাট্টায় মজে ছিলেন ট্রেন সফরে। সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু মাঝপথ থেকেই ট্রেন নির্ধারিত সময়ের ৩-৪ ঘণ্টা দেরিতে চলতে থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন চন্দ্রশেখর। কারণ ঠিক মতো হাওড়া পৌঁছতে না পারলে, সরাইঘাট যাওয়ার ট্রেন ছেড়ে দেবে। ফলে বিয়ের মণ্ডপে সময়মতো হাজির হতে না পারলে লগ্ন পেরিয়ে যাবে। আর এই আশঙ্কাই ক্রমে ঘিরে ধরেছিল চন্দ্রশেখরকে।

মুম্বই থেকে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস সকাল ৬টায় ছাড়ে। পর দিন দুপুর ১টায় হাওড়ায় পৌঁছনোর কথা। আবার হাওড়া থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেস ছাড়ে বিকেল ৪টে ৫ মিনিটে। আর এই ট্রেনটিই ধরার কথা ছিল চন্দ্রশেখরের। কিন্তু মাঝপথে ট্রেন ৩-৪ ঘণ্টা দেরি হওয়ায় সরাইঘাট এক্সপ্রেস পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হচ্ছিল। আনন্দের সফর ক্রমে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় ভরে উঠল চন্দ্রশেখরদের। কী করবেন, কী উপায় আছে, এই ভাবতে ভাবতেই হাতে ফোন তুলে সরাসরি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে এক্স (সাবেক টুইটার) করে গোটা ঘটনাটি জানান। সঙ্গে জুড়ে দেন হাওড়ার ডিআরএমকে। তাঁর সঙ্গে যে কয়েক জন বয়স্ক অতিথিও রয়েছে তা-ও উল্লেখ করেন চন্দ্রশেখর। শুধু তা-ই নয়, সরাইঘাট এক্সপ্রেস না পেলে লগ্ন পেরিয়ে যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

Advertisement

এই বার্তা পাঠিয়ে যখন চন্দ্রশেখর উত্তরে অপেক্ষা করছিলেন, চমকে দিয়ে রেলমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ উত্তর দেন। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার, হাওড়ার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার, সিনিয়র কমার্শিয়াল ম্যানেজারের কাছে এ সম্পর্কে নির্দেশ পৌঁছতেই তৎপর হন। সরাইঘাট এক্সপ্রেসকে কিছু ক্ষণ হাওড়ায় অপেক্ষা করানো হয়। পাশাপাশি, গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসের চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ট্রেনটি যাতে দ্রুত হাওড়া পৌঁছতে পারে তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়। হাওড়ায় রেলের কর্মীরা চন্দ্রশেখরের জন্য অপেক্ষা করেন। গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস ২১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছতেই রেলের কর্মীরা চন্দ্রশেখরের সমস্ত আত্মীয়কে দ্রুত ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। চন্দ্রশেখরেরা সকলে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে ওঠেন। তার পরই ট্রেন হাওড়া ছাড়ে। রেলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘এটি শুধু পরিষেবার বিষয় নয়, যাত্রীদের প্রতি রেলের দায়বদ্ধতার দৃষ্টান্তও বটে। রেল যদি এই উদ্যোগ না নিত, তা হলে আমার জীবনের অনেক ক্ষতি হয়ে যেত। রেলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘যাত্রীদের সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে আমার বদ্ধপরিকর। আমরা ওই যাত্রীকে এই পরিষেবা দিতে পেরে খুশি। ওঁর নতুন জীবনের জন্য আগাম শুভেচ্ছা রইল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement