কুস্তাউর রেল স্টেশনে অবরোধ জারি। — নিজস্ব চিত্র।
কুড়মি আন্দোলনের চতুর্থ দিনে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি পাঠাল রাজ্য। ‘কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (সিআরআই) ওই চিঠি পাঠিয়েছে। ওই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে আন্দোলনকারীদের কাছেও। তবে চিঠি পাঠানো হলেও তড়িঘড়ি আন্দোলনে ইতি টানছেন না আন্দোলনকারীরা। এ নিয়ে আলোচনায় বসবেন তাঁরা।
কুড়মি জাতিকে তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত করা এবং কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলির অন্তর্ভুক্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়ায়। চলছে রেল এবং রাস্তা অবরোধ। শুক্রবার সেই আন্দোলন চার দিনে পড়লেও অনড় আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনের চতুর্থ দিনে রাজ্যের তরফে সিআরআই চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রকে। শুক্রবার দুপুরে সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয় আন্দোলনকারীদের কাছেও। এ নিয়ে কুড়মি সমাজের মূল নেতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা যে চিঠির দাবি এত দিন করে এসেছি সেই চিঠির প্রতিলিপি পেয়েছি। চিঠির প্রথম পাতা দেখে ঠিক মনে হয়েছে। তবে এই চিঠি আমরা আগে ভাল করে বিশেষজ্ঞদের দেখাব। তার পর যা বলার বলব।’’
ওই চিঠি পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলির আন্দোলনকারীদের কাছেও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন অজিতপ্রসাদ। চিঠি খতিয়ে দেখার পর অবরোধ তুলে নেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অজিতপ্রসাদ আরও বলেন, ‘‘কোনও জাতির স্বতন্ত্র জাতিসত্তা আছে কি না, তা নিয়ে গবেষণা করে সিআরআই। আমরা ওই সংস্থার রিপোর্টই এত দিন পাঠানোর দাবি করে এসেছি।’’
এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়া-২ ব্লকের বিডিও দেবজিৎ রায় বলেন, ‘‘চিঠির প্রতিলিপি ওঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন ওঁদের কেন্দ্রীয় কমিটি আলোচনা করছে। দেখা যাক কী হয়।’’
গত চার দিন ধরে অবরুদ্ধ পুরুলিয়া-আদ্রা সেকশনের কুস্তাউর স্টেশন। অবরোধ চলছে খেমাশুলি স্টেশনেও। পাশাপাশি খেমাশুলির কাছেই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কেও চলছে অবরোধ। চার দিন ধরে চলা এই আন্দোলন শেষ হোক, এটাই চাইছেন ভুক্তভোগীরা।
ঘটনাচক্রে কেন্দ্রীয় আদিবাসী মন্ত্রকে কুড়মিদের দাবির কথা চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের সচিব। বুধবার রাতে সেই চিঠি কুড়মি সমাজের নেতাকে অবরোধ তুলে নেওয়ার দাবি জানান রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। কিন্তু কুড়মিদের যৌথ মঞ্চের নেতা রাজেশ মাহাতোর পাল্টা বক্তব্য, মন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে আবেদন করেছেন, কিন্তু প্রশাসন এখনও উদাসীন।