নীতিশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
জাতিসত্তার আন্দোলনে এ বার নীতীশ কুমারের জনতা দল (ইউ)-কে পাশে চাইল পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা সমন্বয় সমিতি। তিন রাজ্যের আদিবাসী কুড়মিদের ওই যৌথ সংগঠন সূত্রে জানা যায়, ছোটনাগপুরের কুড়মি সম্প্রদায়কে জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে গত শনিবার তাদের এক প্রতিনিধি দল বিহারের পটনায় নীতীশ কুমারের বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। দলে থাকা পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য কল্যাণপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “আমরা নীতীশ কুমারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, তিনি যেন প্রধানমন্ত্রীর গোচরে বিষয়টি আনেন। উনি কিছু সময় কথাবার্তার পরে বেরিয়ে গেলেও তাঁর আপ্তসহায়ক সমস্ত নোট নিয়েছেন।” দলে
মোট ৪৫ জন প্রতিনিধি ছিলেন, জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজের রাজ্য সম্পাদক শুভেন্দু মাহাতো।
জাতিসত্তার আন্দোলনে কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠনকে যখন এ রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে, পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজকে সরকারের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। সংগঠনের নেতৃত্বের যুক্তি ছিল, জাতিসত্তার আন্দোলনে তাঁরাও দীর্ঘদিন পথে রয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন কুড়মিদের দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন, আন্দোলনের অভিমুখ কেন্দ্রমুখী হওয়া উচিত। কেননা, তাদের জাতিসত্তার যে মূল দাবি, তাকে মান্যতা দেওয়ার অধিকার কেবল কেন্দ্রীয় সরকারেরই রয়েছে।
ঘটনা হল, জনতা দল (ইউ) বর্তমানে কেন্দ্রে নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শরিক। সেখানে পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতৃত্বের তিন রাজ্যের সমন্বয় কমিটির সঙ্গী হয়ে নীতীশ কুমারের কাছে যাওয়া নিয়ে ওই সংগঠনের শিবির ‘বদলের’ সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। শুভেন্দু তবে বলেন, “পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজ একটি সামাজিক সংগঠন। কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকা সংগঠন নই। জাতিসত্তার আন্দোলনে আমরা দীর্ঘদিন পথে রয়েছি। যাঁরা আমাদের পাশে থাকবেন, আমরাও তাঁদের পাশে থাকব—এটাই আমাদের নীতি।” তাঁর সংযোজন, “আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে নীতীশ কুমারের কাছে যাইনি। ছোটনাগপুরের কুড়মি সম্প্রদায়কে জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার স্বীকৃতির দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। এনডিএ সরকারের শরিক হয়ে তিনি যেন সেই দাবি পূরণে উদ্যোগী হন।”
জাতিসত্তার আন্দোলনে পথে নামা আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিত মাহাতো বলেন, “শুধু তো আমাদের সংগঠনই নয়, কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠন জাতিসত্তার আন্দোলনে রাস্তায় রয়েছে। তাঁরাও আন্দোলন করছেন। আমাদের প্রত্যেকের লক্ষ্য একই।”