বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় কুড়মি সমাজের প্রার্থীদের। — ফাইল চিত্র।
জঙ্গলমহলে এ বার পঞ্চায়েতে লড়ছেন কুড়মি সমাজের প্রার্থীরা। পুরুলিয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েতের দু'টি আসনে জয় নিশ্চিতও করে ফেলেছেন দুই কুড়মি প্রার্থী।মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। তারপর দেখা যাচ্ছে এই জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছেন ১৪জন প্রার্থী- ১২জন তৃণমূলের, আর দু'জন হলেন কুড়মি সমাজ সমর্থিত নির্দল।
ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা অভিজিৎ কাটিয়ার বলছেন, ‘‘দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভুত ক্ষোভ এবং মিথ্যা অভিযোগে আন্দোলনকারীদের ধরপাকড়ের প্রতিবাদ হল এই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়। ভোটের লড়াইতেও বেশ কয়েক জায়গায় সামাজিক প্রার্থীদের জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’’ আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিত মাহাতোরও দাবি, ''আমরা ভোটে লড়ছি না। তবে জাতিসত্তার লড়াইয়ে যে ভাবে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, এটা তারই ফল।"
প্রশাসন সূত্রের খবর, পুরুলিয়া-২ ব্লকের আগয়া-নড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডুমুরডি সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন রঘুনাথ মাহাতো। আরও দুই নির্দল প্রার্থী বিশ্বজিৎ মাহাতো ও বিপ্লবকুমার মাহাতো মনোনয়ন জমা দিলেও শেষ দিনে প্রত্যাহার করে নেন।বান্দোয়ান গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গামান্না গ্রামের ২ নম্বর সংসদেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন কুড়মি সামাজিক প্রার্থী শিবানী রাজোয়াড়। এই আসনেও রেখা কালিন্দী নামে একজন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন করেছিলেন। তবে মঙ্গলবার তিনি মনোনয়ন তুলে নেন।
আগয়া-নড়রা পঞ্চায়েতে গত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায়নি তৃণমূল। পরে বিজেপির এক সদস্য তৃণমূলে এলে তারা পঞ্চায়েতটি দখল করে। সম্প্রতি এই এলাকাই জেলায় কুড়মি আন্দোলনের সূতিকাগৃহ হয়ে উঠেছে। এই পঞ্চায়েতেরই কুস্তাউর ষ্টেশনে অবরোধ হয়েছে বারবার। অবরুদ্ধ হয়েছে লাগোয়া পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার কর্মসূচির সময়ও গোটা জেলার মধ্যে শুধু এখানেই তোরণটুকু করতে পারেনি তৃণমূল। উল্টে এখানে অভিষেকের কনভয়কে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়, ওঠে 'হায় হায়' স্লোগান। বান্দোয়ান গ্রাম পঞ্চায়েতেও কুড়মিদের ভাল সমর্থন রয়েছে।
পুরুলিয়ার বিধায়ক বিজেপির আর বান্দোয়ানে আছেন তৃণমূল বিধায়ক। তাও এই দুই আসনে দলীয় প্রার্থী নেই কেন? তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার জবাব, "ওখানে গ্রামের মানুষ একজোট হয়ে কুড়মি সমাজের প্রার্থী দিয়েছেন। শুধু আমরা নই, কোনও দলই তাই প্রার্থী দেয়নি।" বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গাও বলেন, ''মানুষের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা আমরা করিনি।"