শৈশব থেকেই দুই হাত অকেজো। হাঁটাচলাতেও সমস্যা। কিন্তু অদম্য জেদ তাঁকে টেনে এনেছে মাধ্যমিকের দরজায়। পায়ে লিখেই মাধ্যমিকের পরীক্ষা দিচ্ছে আড়শা ব্লকের কলাবনি গ্রামের খেরোয়াল হেমব্রম।
দিনমজুর পরিবারের সন্তান এই ছেলের কাছে মাধ্যমিকে বসা উত্তরণের একটা ধাপ। তার বাবা অজিত হেমব্রমের কথায়, ‘‘খেরোয়াল ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছিল। যার ফলে তার দুটো হাত অকেজো হয়ে যায়। ভাল করে হাঁটতেও পারে না। বাড়িতে স্নান, খাওয়ানো থেকে পোশাকও পরিয়ে দিতে হয়।’’
শিরকাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণবীর চৌধুরী বলেন, ‘‘খেরোয়াল ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধী। বন্ধুরাই তাকে সাইকেলে চড়িয়ে স্কুলে নিয়ে আসে। বন্ধুরা তাকে এতটাই ভালবাসে মিড-ডে মিল খেতেও সহায়তা করে।’’
এই ব্লকেরই রাঙামাটি স্বামী শ্রদ্ধানন্দ বিদ্যাপীঠ থেকে খেরোয়াল পরীক্ষা দিচ্ছে।
আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বরূপ মাঝি বলেন, ‘‘কলাবনি গ্রাম থেকে রাঙামাটি পর্যন্ত অতদূরে প্রতিদিন পরীক্ষা দিতে যাওয়া খেরোয়ালের পক্ষে সমস্যার। তাই আমরা ওকে পরীক্ষাকেন্দ্রের ছাত্রাবাসেই থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। খেরোয়ালের সঙ্গে তার বাবাকে থাকার অনুমতি দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।’’
পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক নবদ্বীপ কুইরী বলেন, ‘‘ছেলেটি ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিধি মোতাবেক তাকে ৪৫ মিনিট বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে।’’
খেরোয়ালের কথায়, ‘‘প্রথম দিন ভাল পরীক্ষা দিয়েছি। আমি লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।’’