রক্ষী শিবির উদ্বোধন হওয়ায় খুশি বাসিন্দারাও। নিজস্ব চিত্র
মাওবাদী হামলার পরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আড়শা থানার কাঁটাডি রক্ষী শিবির। ১৭ বছর পরে বুধবার পুরুলিয়া-জামশেদপুর (৩২ নম্বর) জাতীয় সড়ক লাগোয়া কাঁটাডি রক্ষী শিবির ফের চালু হল। ওই শিবির সূচনা করেন জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) চিন্ময় মিত্তল।
২০০৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কাঁটাডি স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া ওই রক্ষী শিবির লুট করে মাওবাদীরা। সে দিন সাপ্তাহিক হাট ছিল কাঁটাডিতে। সেখানে গোলমালের অজুহাত নিয়ে অভিযোগ জানাতে রক্ষী শিবিরে ঢুকে কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র লুট করে অযোধ্যাপাহাড়ে গা ঢাকা দেয় মাওবাদীরা।
তারপর থেকে তালা পড়ে যায় ওই রক্ষী শিবিরে। তার জেরে এলাকার বাসিন্দাদের পুলিশের কাছে প্রয়োজন পড়লে টামনা হয়ে যেতে হত ৩৫ কিলোমিটার দূরের আড়শা থানায়। পুলিশ সূত্রে খবর, কনস্টেবল, এএসআই-সহ দু’জন অফিসার থাকবেন এই রক্ষী শিবিরে। আড়শার চাটুহাঁসা ও পুয়াড়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা সেখানে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
কাঁটাডির বাসিন্দা সুধাকর প্রসাদ বলেন, ‘‘ওই রক্ষী শিবিরটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছিল। একটি মোবাইল ফোন হারালেও অভিযোগ জানাতে আড়শা থানায় যেতে হত।’’ তা ছাড়া এই জাতীয় সড়কের উপরে বলরামপুরের আগে পুলিশের কোনও শিবির বা ফাঁড়িও ছিল না। কাঁটাড়িতে পুলিশের এই শিবিরটি চালু হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা খুশি।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘একটি ঘটনার জেরে দীর্ঘদিন এই শিবিরটি বন্ধ হয়ে পড়েছিল। আড়শা থানা থেকেই এতদিন এই এলাকাটি দেখা হত। ফের শিবিরটি চালু করা হল। এই রাস্তাটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব মিলিয়ে বাসিন্দারা এই শিবির থেকে উপকৃত হবেন।’’
এলাকার বিজেপি বিধায়ক বাণেশ্বর মাহাতো বলেন, ‘‘ভৌগোলিক বিচারে গুরুত্বপূর্ণ এই শিবির আগেই চালু করা উচিত ছিল। তবে এতদিন পরে জেলা পুলিশ ফের এই শিবিরটি চালু করায় আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। জেলার প্রত্যন্ত আরও কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে এই ধরনের রক্ষী শিবির চালু করলে মানুষ উপকৃত হবেন।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই জঙ্গলমহলে মাওবাদী সন্ত্রাস উধাও হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মূলস্রোতে ফিরেছে মাওবাদীরা। বিরোধীরা যতই বলুক, দীর্ঘদিন আগে আগ্নেয়াস্ত্র লুটের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই শিবিরটি ফের চালু করার মধ্যে দিয়ে অন্তত প্রমাণিত হল, জঙ্গলমহলে শান্তি রয়েছে।’’