বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি অনুব্রত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের জেলবন্দি জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলই তাঁর রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু। যেটুকু রাজনীতি তিনি শিখেছেন, তা অনুব্রতের হাত ধরেই। বুধবার বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদ পাওয়ার পর মন্তব্য তৃণমূল নেতা কাজল শেখের। পাশাপাশি, জানান, অনুব্রতের দেখানো পথেই চলতে চান তিনি। কাজল বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল আমার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু। যেটুকু শিখেছি ওঁর থেকেই শিখেছি। ওঁর দেখানো পথেই চলতে চাই।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার বীরভূম জেলা পরিষদের বোর্ড গঠন ছিল। বোর্ড গঠনের পর জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসাবে শপথগ্রহণ করেন কাজল। প্রথম বারের জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়েই সভাধিপতির আসনে বসলেন তিনি। সভাধিপতি হয়ে শপথগ্রহণের মঞ্চ থেকে জেলার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বার্তাও দিয়েছেন কাজল। জানিয়েছেন, বীরভূম জেলায় দলের কাউকে দুর্নীতি করতে দেবেন না তিনি। কাজল বলেন, ‘‘এখন থেকে আমি অঞ্চলে অঞ্চলে ঘুরব। কোনও রকম দুর্নীতি সহ্য করব না। আমি খাবও না, কাউকে খেতেও দেব না।’’ লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলার দু’টি আসনে তৃণমূল লক্ষাধিক ভোটে জয়লাভ করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কাজলের শপথগ্রহণের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শতাব্দী রায়ও। মঞ্চ থেকেই কাজলের অনুগামীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শতাব্দী। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের ভাইজান সভাধিপতি হয়েছে। খুব আনন্দের ব্যাপার। কিন্তু ভাইজানের নাম যাতে খারাপ না হয় সেটাও আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। কোনও বাজে কাজ করা যাবে না।’’
অন্য দিকে, কাজলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন প্রাক্তন সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে পর পর দু’বার জেলা সভাধিপতি ছিলেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ। মনে করা হচ্ছিল তৃতীয় বারও সভাধিপতির পদ তিনিই পাবেন। তবে গত কয়েক মাসে বীরভূমের রাজনীতিতে গুরুত্ব বেড়েছে কাজলের। অনুব্রতের গ্রেফতারির পর বীরভূম জেলায় দলের রাশ টেনে রাখতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোর কমিটি তৈরি করা হয়। কোর কমিটি তৈরি করেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সেই কমিটির সদস্যও করা হয়েছিল কাজলকে। আর তাই জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে কাজলকে বসানো হতে পারে বলে জল্পনা উঠেছিল। সেই জল্পনা সত্যি করে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হলেন কাজল। কাজলকে জেলা পরিষদে শপথবাক্য পাঠ করালেন জেলাশাসক বিধান রায়। কাজলের পাশাপাশি শপথগ্রহণ করলেন আরও ৫২ জন সদস্য।