এলাকাতেই কাজ চাই, উঠল দাবি

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাঁকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধবল মণ্ডল। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় উঠে এসেছে। সঞ্চালনায় ছিলেন রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। রইল বাছাই কিছু প্রশ্নোত্তর।এলাকার অনেক বধূ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বাধ্য হয়ে তাঁরা পরিবার ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু টাকার অভাবে আইনি পদক্ষেপ করতে পারছেন না। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর কোনও পরিকল্পনা করা হচ্ছে কি?

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০২:৪২
Share:

বেলিয়া এবং কেঞ্জাকুড়া গ্রামের মাঝে দ্বারকেশ্বরে এ ভাবেই চলে পারাপার। —নিজস্ব চিত্র

• এলাকার অনেক বধূ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বাধ্য হয়ে তাঁরা পরিবার ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু টাকার অভাবে আইনি পদক্ষেপ করতে পারছেন না। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর কোনও পরিকল্পনা করা হচ্ছে কি?

Advertisement

নাজিমুদ্দিন মল্লিক, নতুনগ্রাম

Advertisement

সভাপতি: ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই এক জন করে আইনজীবী নিযুক্ত রয়েছেন। তাঁদের কাজ বিনামূল্যে মানুষকে সাহায্য করা। পঞ্চায়েত সমিতি থেকেও এক জন আইনজীবী নিয়োগ করার কথা ভাবা হচ্ছে। এই ধরণের পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে পাওয়া যাবে।

• বাজারহাট থেকে শুরু করে স্কুল— বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বেলিয়ার মানুষ পড়শি গ্রাম কেঞ্জাকুড়ার উপর নির্ভর করেন। দু’টি গ্রামের মাঝাখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে দ্বারকেশ্বর নদ। রোজ ভেলায় চড়ে দ্বারকেশ্বর পারাপার করেন দুই গ্রামের মানুষ। বর্ষাকালে খুবই মুশকিল হয়। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলে পারাপার। বেলিয়া শ্মশানঘাট থেকে রামনগর ঘাট পর্যন্ত সেতু বা কজওয়ে করার কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি?

প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়, বেলিয়া

সভাপতি: ওই এলাকায় সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। বাঁকুড়ার প্রয়াত বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্র বিধানসভাতেও এই দাবি তুলেছিলেন। আমরা মাপজোক করে ৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পঞ্চায়েত দফতরে পাঠিয়েছি। পঞ্চায়েত মন্ত্রীর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই সেতু তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।

বাঁকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধবল মণ্ডল।

• গাঁধী বিচার পরিষদ সেচের ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু পাম্পসেট খারাপ হয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে জল পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি কি পঞ্চায়েত সমিতির নজরে রয়েছে?

আইনুল হক খান, নতুনগ্রাম

সভাপতি: জলের সমস্যা থাকায় এই এলাকায় ভারী শিল্প গড়ে তোলা মুশকিল। আমরা একশো দিনের কাজ প্রকল্পে বিভিন্ন ছোট শিল্প তৈরি তৈরি করে কর্মসংস্থান করার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই দু’টি ছাই-ইঁট তৈরির কারখানা চালু হয়েছে। এলাকায় একটি সিমেন্ট তৈরির কারখানাও গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানেও অনেক মানুষ কাজ পাবেন। এ ছাড়া একশো দিনের কাজ তো রয়েছেই।

• গ্রামের ছেলে-মেয়েদের কাজের সন্ধানে বাইরে যেতে হচ্ছে। এলাকায় শিল্প গড়ে তোলার জন্য কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে কি?

শেখ আইনুল, নতুনগ্রাম

সভাপতি: মূল রাস্তার পাশাপাশি গলির রাস্তাগুলির দিকেও পুরসভার নজর রয়েছে। সমস্ত রাস্তা কংক্রিটের করে দেওয়া হবে। বেশ কিছু রাস্তা ইতিমধ্যেই ঢালাই করা হয়েছে। যে রাস্তাগুলি হয়নি, সেগুলিতেও দ্রুত কাজ শুরু হবে।

• আমাদের এলাকার চাষজমি অন্য জায়গার তুলনায় উঁচু। সেচের ব্যবস্থাও নেই। বড় কুয়ো খোঁড়া হলে সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে। পঞ্চায়েত সমিতি কি কিছু ভাবছে?

সামির আলম মিদ্যা, বাদুলাড়া

সভাপতি: ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় বড় কুয়ো খোঁড়ার কাজ চলছে। ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পে এলাকায় বড় হাঁপাও গড়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি, রাজ্য সরকার উঁচু জমিতে পেঁয়াজ, ভুট্টার মতো বিকল্প চাষ করার জন্য প্রচার করছে। এই চাষে জল কম লাগে। সরকারি ভর্তুকিও পাওয়া যায়। যে সমস্ত চাষিরা উঁচু জমিতে গতানুগিত চাষ করেন তাঁরা কৃষি বা উদ্যানপালন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিকল্প চাষের জন্য সাহায্য এবং পরামর্শ পাবেন। এই চাষে লাভও বেশি পেতে পারেন।

• আমাদের গ্রামের ডোমনিপাড়া মোড় থেকে ধুলিয়াডিহি পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। বর্ষায় সেটি দিয়ে যাতায়াত করা খুবই সমস্যার হয়ে পড়ে। পাশাপাশি নিকাশি ব্যবস্থা বলেও এলাকায় কিছু নেই। তার ফলে বর্ষায় সাধারণ মানুষের সমস্যা আরও বাড়ে। পঞ্চায়েত সমিতি এ বিষয়ে কী ভাবছে?

সানাজুল মিদ্যা, ধুলিয়াডিহি

সভাপতি: প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে ওই রাস্তাটি পাকা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এলাকার আরও বেশ কিছু রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। নিকাশির সমস্যা মেটাতে বিভিন্ন এলাকায় নালা তৈরির কাজও শুরু করেছে পঞ্চায়েত সমিতি। বেশ কয়েকটি গ্রামে কাজ চলছে। ধুলিয়াডিহিতেও নালা তৈরি করা হবে।

• গ্রামের অনেক মানুষ এখনও মাটির বাড়িতে বসবাস করেন। ঝড়ে বাড়ি ধসে পড়ে। বর্ষায় চাল ফুটো হয়ে বৃষ্টির জল ঘরে ঢোকে। সরকারের একাধিক গৃহনির্মাণ প্রকল্প থাকলেও এখনও অনেকেই সেই সুবিধা পাননি। পঞ্চায়েত সমিতি বিষয়টি নিয়ে কী ভাবছে?

জামিরুদ্দিন খান, ভিকুরডিহি

সভাপতি: গৃহ নির্মাণ প্রকল্পগুলি চলছে। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। আবার প্রকল্পের টাকা নেওয়ার পরে, বাড়ি তৈরি না করে সেই টাকা অন্য কাজে কেউ কেউ খরচ করে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ এসেছে। এই সমস্ত মিলিয়ে প্রকল্পের গতি কিছুটা ধাক্কা খাচ্ছে। কাজের পদ্ধতি আরও স্বচ্ছ করে তোলার জন্য আমরা এই সমস্ত বিষয়ের উপর বিশেষ ভাবে
নজর রাখছি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement