পুরুলিয়ার মসিনা গ্রামের ঝাড়ু মাহাতো। নিজস্ব ছবি।
নিজে কৃষক। প্রান্তিক চাষি। মাঠে গরু-বলদও চরান। পুরুলিয়ার সেই ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার নাম বাদ গেল প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনার উপভোক্তাদের তালিকা থেকে। কারণ তিনি নাকি ‘চাকরিজীবী’! যা শুনে কার্যত হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন পুরুলিয়ার মসিনা গ্রামের ঝাড়ু মাহাতো।
আবাস প্লাসের তালিকায় প্রথমে ঝাড়ুর নাম ছিল। কিন্তু পরে সমীক্ষার সময় তাঁর নাম কাটা গিয়েছে। খোঁজ করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, সমীক্ষার ফর্মে তাঁকে ‘সরকারি চাকরিজীবী’ হিসাবে দেখানো হয়েছে। রিপোর্ট গিয়েছে, তাঁর বেতন নাকি মাসে ১০ হাজার টাকা! ঝাড়ু বলেন, ‘‘জানতে পারি যে আমাকে সরকারি চাকরিজীবী ও ১০ হাজার টাকার বেশি বেতনের সরকারি কর্মচারী দেখিয়ে দিয়ে আমার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে তালিকা থেকে।’’
আবাস যোজনার তালিকা থেকে ‘অযোগ্য’দের নাম বাদ দিতে রাজ্য জুড়ে সমীক্ষা চলেছে। সেই প্রক্রিয়া এখন প্রায় শেষ। অভিযোগ উঠছে, বহু প্রকৃত গরিব হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। এ নিয়ে পুরুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভও চলছে। ঝা়ড়ু বলেন, ‘‘আমার কাঁচা বাড়ি। মাঠে গরু নিয়ে যাই। চাষ করি। আমার পরিবারে ছ’জন সদস্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাড়ি পাইনি।’’ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘সরকারের কাছে আমার বিনীত আবেদন, আমার আর বাড়ি চাই না! তবে আমি কোথায় চাকরি করি, সেটা অন্তত আমাকে দেখিয়ে দেওয়া হোক।’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ভবতারণ মাহাতো বলেন, ‘‘যাঁরা সার্ভে করেছেন, তাঁরা সঠিক ভাবে কাজ করেননি। বাড়িতে বসেই সার্ভের কাজ হয়েছে। তাই এই সব কাণ্ড ঘটেছে|’’
ঝালদা ১ ব্লকের বিডিও রাজকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘তথ্য না দেখে বলা সম্ভব নয়। ওঁর নাম কী ভাবে বাদ গিয়েছে, জানি না। চাকরিজীবী দেখিয়ে ওঁর বাদ দেওয়া হয়েছে না কি অন্য কোনও কারণে বাদ পড়েছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’