তপন কান্দু। — ফাইল চিত্র।
পারিবারিক বিবাদ এবং জমি-জায়গা সংক্রান্ত বিবাদে খুন হয়েছেন পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। এর উল্লেখ রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-র দেওয়া চার্জশিটে। এমনটাই দাবি করেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবী নন্দলাল সিংহানিয়া। ঘটনাচক্রে এর আগে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভা মুরুগান সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেছিলেন, পারিবারিক বিবাদের জেরেই খুন হয়েছেন তপন।
তপন-হত্যা মামলায় তদন্তভার নেওয়ার পর প্রায় ৭০ দিনের মাথায় গত ১৩ জুন চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। ওই চার্জশিটে খুনের কারণ হিসেবে ‘পারিবারিক বিবাদ’ এবং ‘জমিজায়গা সংক্রান্ত বিবাদ’কে দায়ী করা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন নন্দলাল। ওই আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘গত ১৩ জুন চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। যে অভিযোগ চার্জশিটে করা হয়েছে, তাতে পারিবারিক বিবাদ, জমি-জায়গা সংক্রান্ত বিবাদের কথা বলা হয়েছে। যা ২০১৬ সাল থেকে আছে। সিবিআই তদন্ত মনে হচ্ছে খুব একটা সন্তোষজনক নয়। কারণ, যে বিবাদটা দেখাতে চেয়েছে, তা এই মামলা সংক্রান্ত নয়।’’ নন্দলাল এ-ও দাবি করেছেন, সিবিআই যে চার্জশিট দিয়েছে, তাতে ঝালদার আইসি সঞ্জীব ঘোষ সম্পর্কে একটি শব্দও লেখা হয়নি।
তপন-খুনে টাকার নেলদেন নিয়ে নন্দলালের দাবি, ‘‘খুন করানোর বরাত যে সাত লাখ টাকায় রফা হয়, তার মধ্যে থেকে দু’লাখ টাকা কলেবর সিংহকে না দিয়ে আশিক খান নিজের কাছে রেখে দিয়েছিল। তার মধ্যে সিবিআই আশিক খানের কাছ থেকে ৫২ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে।’’ কিন্তু বাকি এক লাখ ৪৮ হাজার টাকার কোনও উল্লেখ নেই বলেও জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
এ নিয়ে তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর বক্তব্য, ‘‘সিবিআই এখনও তদন্ত শেষ করেনি। আশা করি রহস্যের পর্দা ফাঁস হবে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই আরও অনেক কিছু জানতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস। সত্যবান পরামানিক আমার পরিবারের কেউ নয়। সে তো তৃণমূল নেতা। তাই এই খুনের সঙ্গে রাজনীতির যে যোগ রয়েছে তা অস্বীকার করা যায় না। আমার স্বামীর কাছে হেরে যাওয়ার পরই তৃণমূল এই খুন করেছে।’’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছিল, তাতে নিহত তপনের দাদা নরেন কান্দু, তপনের ভাইপো দীপক কান্দু, নরেনের পরিচিত আশিক খান, সত্যবান পরামানিক এবং ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা কলেবর সিংহের নাম রয়েছে। চার্জশিট জমা দেওয়ার পাশাপাশি ওই কাণ্ডে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার আবেদনও করেছে সিবিআই। শনিবার ওই মামলার এজলাস বদল হয়েছে। পুরুলিয়া জেলা আদালতের মুখ্য বিচারকের এজলাসে মামলাটি এ বার থেকে শুনানি হবে।