—ফাইল চিত্র।
আয় বাড়াতে কর-কাঠামোয় বদল আনার কথা ঘোষণা করলেন পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার প্রশাসক তথা বিদায়ী পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার। গত ১২ জুন এই সংক্রান্ত একটি নোটিস জারি হয়। তবে নানা প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়েছে, এর ফলে করোনা-বিধ্বস্ত সময়ে সাধারণ মানুষের উপরে বাড়তি চাপ পড়বে। প্রদীপবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘পুরসভার আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। সমস্ত দিক বিবেচনা করেই কিছু ক্ষেত্রের কর সামান্য বাড়ানো হয়েছে। এতে অসুবিধা হবে না।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ির কর (হোল্ডিং ট্যাক্স) ছিল মাসে ২ টাকা। সেটা ১০ টাকা করা হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্সের ফি ২০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা। সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য পুরসভা থেকে পানীয় জলের ছোট ট্যাঙ্ক মেলে। এত দিন ট্যাঙ্ক পিছু ৩০০ টাকা দিতে হত। এ বার দিতে হবে ৫০০ টাকা। বাড়ির নকশা পাশ করানোর করও বাড়ানো হয়েছে।
অন্য দিকে, পুরসভা নিয়ন্ত্রিত মার্কেট কমপ্লেক্সে দোকানঘরের ভাড়া প্রতি মাসে ৬০ টাকা এবং ১০০ টাকা ছিল। তা ৩০০ টাকা করার পরিকল্পনা চলছে বলে পুরসভা সূত্রের দাবি। নামোপাড়া এলাকায় পুরসভার জায়গা অস্থায়ী দোকানগুলিকে ৯৯ বছরের জন্য লিজে দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সরকারি টাকা আসার আগেই মাসের শেষে অবসরপ্রাপ্ত ৬০ জন কর্মীকে পুরসভার তহবিল থেকে পেনশন দেওয়া হত বলে জানিয়েছেন প্রদীপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এই অবস্থায় সময়মতো পেনশনের টাকা না এলে দিতে খুব সমস্যা হচ্ছে। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে চিঠি
দিয়ে জানিয়েছি।’’
পুরবোর্ড এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি না, তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। তবে এসডিও (ঝালদা) সুশান্ত ভক্ত বলেন, ‘‘পুরসভা পঞ্চায়েতের মতো স্বশাসিত সংস্থা। আইনত এই প্রক্রিয়ায় কোনও বাধা থাকার কথা নয়।’’ প্রদীপবাবু জানান, ১২ জুন পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সদের একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে বোর্ডের সদস্য তথা বিদায়ী উপপুরপ্রধান কাঞ্চন পাঠক, পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার ও ফিনান্স অফিসার ছিলেন।
ঝালদার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান তপন কান্দু বলেন, ‘‘লকডাউনে এমনিতেই অনেক মানুষের রোজগার বিপন্ন। বাড়তি কর তার উপরে বোঝা হয়ে উঠবে। এক ধাক্কায় না করে, ধাপে-ধাপে কর বাড়ালে চাপ কিছুটা কম হত।’’ যদিও প্রদীপবাবুর দাবি, ‘‘মানুষের উপরে চাপ যাতে না বাড়ে, সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ ঝালদা শহরের বাসিন্দা অপর্ণা চট্টোপাধ্যায় এবং অমরশঙ্কর মহাদানী বলেন, ‘‘অল্প কর বাড়লে সমস্যা নেই। কিন্তু পরিষেবাটা যাতে মেলে, সে দিকেও পুরসভার নজর দেওয়া দরকার।’’