বোরো ধানের বীজতলা। দুবরাজপুরের মেটে গ্রামের কাছে তোলা । —নিজস্ব চিত্র।
বোরো চাষে এ বার জল পাবে বীরভূম জেলা। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে জেলা পরিষদে বৈঠকে এই তথ্য জানিয়েছিল সেচ দফতর। এই মরসুমে বোরো চাষে ঠিক কতটা সেচের জল কত এলাকা জুড়ে দিতে পারবে, সেচ দফতর সেটা স্পষ্ট করে দেওয়ার পরেই বোরো চাষের এলাকা নির্দিষ্ট হয়েছে। জেলায় অবশ্য বোরো ধানের বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারি প্রথম দিক থেকে ৬টি ব্লকের ১২৬টি মৌজার প্রায় ১৭ হাজার একর জমিতে বোরো চাষের জন্য সেচের জল মিলবে। ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের ২৬ তারিখ পর্যন্ত চার ধাপে প্রায় ৪৪ দিন সেচের জল দেওয়া হবে। তবে, এ বছর কমছে সেচসেবিত জমির পরিমাণ।
সেচ দফতরের বক্তব্য, বৃষ্টিপাতে খামখেয়ালিপনা এবং জলাধারে পর্যাপ্ত জল না-থাকায় এই সমস্যা।
সূত্রের খবর, ২০১৯-’২০ সালেও যেখানে বীরভূমের গোটা দশেক ব্লকের কমবেশি ৩০ হাজার একর জমির জন্য সেচের জল মিলত, সেখানে চলতি মরশুমে ব্লক, মৌজা ও সেচযোগ্য জমির পরিমাণ কমে ১৬ হাজার ৭২৫ একর করা হয়েছে। মশানজোড় জলাধার থেকে ছাড়া জল তিলপাড়া হয়ে বিভিন্ন সেচখালের মাধ্যমে বোরো চাষের জমিতে যাবে।
পড়শি মুর্শিদাবাদেও ১৮৬৫ একর জমিতে এখানকার সেচের জল পৌঁছেবে। এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (ময়ূরাক্ষী ক্যানাল সেচ) সন্দীপ দাস জানান, জলাধারে জল কম থাকায় যে পরিমাণ জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব, সেটাই চূড়ান্ত হয়েছে।
সেচ ও কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকেই বোরো চাষের জন্য জল দেওয়া হয়। তার বহু আগে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কোথায় কত পরিমাণ জল দেওয়া হবে। তার উপরেই তাকিয়ে থাকেন চাষিরা। সেচ দফতর কত পরিমাণ জমিতে জল দেবে, সেই অনুয়ায়ী কৃষি দফতর পরিকল্পনা করে কতটা জমিতে বোরো চাষে হবে। কারণ, নিশ্চিত সেচের ব্যবস্থা না থাকলে বোরো চাষ সম্ভব নয়। জল পাওয়ার প্রতিশ্রুতি মেলায় এ বার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ হাজার হেক্টর ধরা হয়েছে। সিউড়ি ১ ও ২, দুবরাজপুর, মহম্মদবাজার, সাঁইথিয়া, লাভপুর ব্লকে জল পৌঁছবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, গত বছরও বর্ষার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। শেষবেলায় বৃষ্টি ঘাটতি পূরণ হলেও অনেক কম জল ছাড়তে হয়েছে জলাধার থেকে।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত মশানজোড় জলাধারে ১ লক্ষ ৮১ হাজার ৩০০ একর ফিট জল রয়েছে। তার মধ্যে বাষ্প হয়ে উড়ে যাওয়া বা মাটিতে চুঁইয়ে যাওয়া, পানীয় জলের জোগান, শিল্পাঞ্চল ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ এবং ঝাড়খণ্ডের রবি ও বোরোর চাষের জন্য জল বাদ দিয়ে ৫৫ হাজার ৫৭০ একর ফিট জলই দেওয়া সম্ভব হবে। বীরভূম ও মুর্শিদাবাদকে।