আগামী ২৮ অগস্ট স্কুল পরিদর্শকের অফিসে অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা।
বেলা ১টা। শনিবার। দফতরের এক কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মানবাজার ১ চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক নন্দদুলাল সিংহ হরেকৃষ্ণপুর প্রাথমিক স্কুলের সামনে গিয়ে দেখলেন, দরজায় ঝুলছে তালা। ছাত্র-শিক্ষক কেউ নেই। হাঁকডাক শুনে গ্রামের কিছু লোকজন এলেন। আর তারও বেশ কিছুক্ষণ পরে দুই শিক্ষক হাজির হলেন। এমনটাই দাবি করে নন্দদুলালবাবু জানান, অনিয়মিত হাজিরা, আর্থিক অনিয়ম ও মিড-ডে মিল বন্ধ রাখার কারণ দর্শাতে চিঠি দেওয়া হয়েছে ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষকে। পরীক্ষা করে দেখার জন্য স্কুল থেকে নিয়ে আসা হয়েছে হাজিরা খাতা-সহ কিছু নথি। আগামী ২৮ অগস্ট স্কুল পরিদর্শকের অফিসে অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা।
নন্দদুলালবাবু বলেন, ‘‘হরেকৃষ্ণপুর প্রাথমিক স্কুল নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে। স্কুলে মিড-ডে মিলে ছাত্র হাজিরা সংক্রান্ত একটি মেসেজ প্রতিদিন পাঠাতে হয়। ২১ অগস্ট কোনও মেসেজ ওই স্কুল থেকে পাওয়া যায়নি। কেন মেসেজ আসেনি জানতে ওই দিন স্কুলে গিয়েছিলাম। গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন, দুই শিক্ষক অনিয়মিত ভাবে স্কুলে আসেন। মিড-ডে মিল হয় না।’’
সমস্ত স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে একটি তথ্যভান্ডার তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে ওই স্কুল যতজন ছাত্র রয়েছে বলে দেখিয়েছে, বাস্তব ছবিটা অন্য বলে দাবি করেছেন পরিদর্শক। তিনি বলেন, ‘‘আগেও এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। উনি জবাব দেননি।’’
আবার, রেজ়োলিউশনের খাতায় দুই শিক্ষকের নামে স্কুল উন্নয়নের টাকা তোলার কথা উল্লেখ থাকলেও কোনও গ্রামবাসীর সই সেখানে নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার কথা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং মিড-ডে মিলের রাজ্য স্তরের কর্তাদের জানানো হয়েছে বলে দাবি
করেছেন নন্দদুলালবাবু। তিনি বলেন, ‘‘শুনানি সংক্রান্ত রিপোর্টও পাঠানো হবে।’’
হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের প্রাথমিক স্কুল নিয়মিত খোলা হয় না। শিক্ষকরাও মর্জি মতো আসেন, যান। পড়ুয়ারা কিছু ক্ষণ চত্বরে খেলাধুলো করে বাড়ি ফিরে আসে।’’ অভিযোগ, তাঁরা প্রতিবাদ করলেও শিক্ষকেরা আমল দেননি।
তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিরুদ্ধ মহান্তীর দাবি, স্কুলে নিয়মিত দুপুরের রান্না হয়। তিনি বলেন, ‘‘মাঝখানে আমি অসুস্থ হয়ে ছুটিতে ছিলাম। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও ঠিক নয়। তা ছাড়া শনিবার স্কুলে ছাত্র না আসায় দু’জনেই বাড়ি চলে গিয়েছিলাম।’’