রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ। মঙ্গলবার রাতে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।
বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে বুধবারও হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখালেন রোগীর পরিজনেরা। এ দিন মৃত রোগীর পরিজনেরা হাসপাতালের এমএসভিপি পলাশ দাসের কাছে যে চিকিৎসকের অধীনে রোগী ভর্তি হয়েছিলেন সেই চিকিৎসককে তাঁদের সামনে আনার দাবিও তোলেন। পাশাপাশি, হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এমএসভিপি লিখিত অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন। যদিও পরিজনেরা চিকিৎসককে হাজির করানোর দাবিতে অনড় থাকেন এবং কোনও লিখিত অভিযোগ না করে চলে যান। এমএসভিপিস জানান, কোনও লিখিত অভিযোগ না হলেও কী কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে তা একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত করে দেখা হবে। যদিও এই ঘটনা আবার হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত তিনটে নাগাদ বুকে ব্যথা নিয়ে রামপুরহাট থানার সৈপুর গ্রামের ২৭ বছরের সামিনা বিবি ভর্তি হন। এমএসভিপি জানান, ওই রোগীর পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং চিকিৎসা চলছিল। মঙ্গলবার রাত ৮টায় সামিনা মারা যান। এর পরেই তাঁর পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, বিনা চিকিৎসায় সামিনার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের মারতে যান। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।
এর আগেও রামপুরহাট মেডিক্যালে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রায় প্রতিটি ঘটনাই হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর পরিজনেরা। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, এটি নামেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এখানে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে বাধ্য হন তাঁরা। সিসিইউ, এসএনসিইউ-র মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই বলেও অভিযোগ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মেডিসিন ওয়ার্ডে ৬০টি শয্যা আছে। কিন্তু সেখানে ১০০ থেকে ১২০ জন ভর্তি থাকেন। অনেক রোগী শয্যা না পেয়ে মেঝেতে থাকতে হয় বলেও অভিযোগ। মেডিসিন ওয়ার্ড-সহ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত নার্সের অভাব আছে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, পর্যাপ্ত নার্স সংখ্যক নার্স না-থাকার জন্য রোগীর যথার্থ পরিষেবা পেতে অনেক দেরি হয়। সে ক্ষেত্রে রোগী
শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটার আশঙ্কা থাকে।
যদিও এমএসভিপির আশ্বাস, ‘‘মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবস্থার উন্নতি ঘটছে। নতুন কয়েকটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হলে আশা করা যায় পরিকাঠামো ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে।’’