ইন্দ্রজিৎ দাঁ। নিজস্ব চিত্র।
শুরু থেকেই লড়াইটা ছিল মেধা বনাম অভাবের। ইন্দ্রজিতের অধ্যবসায় জিতিয়ে দিল মেধাকেই। এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮১ নম্বর পেয়ে জেলায় তৃতীয় হয়েছে মানবাজার থানার গোপালনগর বাজারের অভাবী ঘরের ছাত্র ইদ্রজিৎ দাঁ। গোপালনগর আশুতোষ হাইস্কুলের ছাত্র ইন্দ্রজিৎ বাংলায় পেয়েছেন ৯৬, ইংরাজিতে ৯৬, দর্শনে ৯৮, পুষ্টি বিজ্ঞানে ৯৮, রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ৯৩ ও ভূগোলে ৯২।
পুরুলিয়ার জেকে কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসতে চায় ইন্দ্রজিৎ। সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। তার কথায়, “সিভিল সার্ভিস দফতরের আধিকারিক হতে পারলে আমাদের মতো অনেক সাধারণ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারব। আমার নিজের জীবনের লড়াই থেকে বুঝেছি সাহায্য না পেলে অনেক মেধাবী পড়ুয়াই অন্ধকারে হারিয়ে যায়। আমি তাদের পাশে থাকতে চাই।”
ইন্দ্রজিতের বাবা জয়ন্ত দাঁ স্থানীয় গ্যাস গুদামের অস্থায়ী কর্মী। ছেলের সাফল্যে বাবা ভীষণ খুশি। কিন্তু মেধাবী ছেলের পড়াশোনায় সব রকম ভাবে পাশে থাকতে না পারার জন্য আক্ষেপও রয়েছে তাঁর। বলেন, “আমার না আছে স্থায়ী রোজগার, না আছে জমিজমা। বড় ছেলে স্নাতক হয়ে দুর্গাপুরে একটি দোকানে কর্মচারীর কাজ করে। ইন্দ্রজিতকে কোনও সময়েই আমি সব বই কিনে দিতে পারিনি। ওর স্কুলের শিক্ষকরা সব রকম সহায়তা করেছে। নিজের চেষ্টায় উচ্চমাধ্যমিকে এত ভাল ফল করেছে।”
ছাত্রের সাফল্যে গর্বিত গোপালনগর আশুতোষ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তপনকুমার মাহাতো। তাঁর কথায়, “অভাব অনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা ইন্দ্রজিতের সাফল্য স্কুলকেও গৌরবান্বিত করেছে। ও পঞ্চম শ্রেণি থেকেই আমাদের স্কুলে পড়ে। বইপত্র দেওয়া থেকে সব রকম সাহায্য করে আমরা ওর পাশে থাকতে চেয়েছি। ও আরও
বড় হোক।”