জমায়েত: অবস্থানে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
একদিকে যখন মুখ্যসচিবের উপস্থিতিতে চলছে ডেউচার প্রস্তাবিত কয়লা শিল্পাঞ্চল নিয়ে আলোচনা, তখন তার অদূরেই আদিবাসী সংগঠনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দাদের একাংশ। কয়লা খনি বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপিও দিলেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ-সহ জেলা ও ব্লকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা মহম্মদবাজারের ডেউচা গৌরাঙ্গিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে দ্রুত কয়লা শিল্পাঞ্চল কীভাবে চালু করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন। সেখান থেকে প্রায় পাঁচশো মিটার দূরে দ্বারকা নদীর ডেউচা বাঁধের ধারে এ দিন বীরভূম আদিবাসী গাঁওতা-সহ একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা কয়লা শিল্পাঞ্চল বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। দ্বারকা নদীর পারেই পুলিশের পক্ষ থেকে আটকে দেওয়া হয় পাঁচামির হরিণসিংহ, দেওয়ানগঞ্জ, তালবাঁধ, বারোমেসিয়া, গাবারবাথান, হাবরাপাহাড়ি ও মথুরাপাহাড়ি থেকে আসা আদিবাসী মানুষদের। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের হাত দিয়ে মুখ্যসচিবের কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারী স্থানীয় বাসিন্দা মেনকা টুডু, লক্ষ্মী টুডু, ধনা মুর্মু ও সোমচাঁদ হেমরম বলেন, ‘‘আমরা সকালে জানতে পারি কয়লা শিল্পাঞ্চল চালু করার জন্য ডেউচায় আসবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। তাই তাঁর কাছে আমাদের দাবি জানানোর জন্য এসেছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। আমরা কয়লা শিল্পাঞ্চল চাই না। উচ্ছেদ চাই না। এখানে পাথর শিল্পাঞ্চল রয়েছে। আর আমরা সেখানেই কাজ করতে চাই ও নিজেদের জমিতে চাষ করে জীবনযাপন করতে চাই।’’
বীরভূম আদিবাসী গাঁওতার সম্পাদক সুনীল সরেনের ক্ষোভ, ‘‘এখানে রাজ্যের মুখ্য সচিব আসছেন সেই খবরটাও এলাকার সমস্ত জমি মালিকের কাছে নেই। আলোচনায় রয়েছেন, যাঁদের কোনও জমি নেই তাঁরা। তৃণমূলের নেতৃত্বে একটি সাজানো কমিটিকে নিয়ে মুখ্যসচিবের সামনে উপস্থিত করা হচ্ছে এবং স্থানীয় এলাকার আদিবাসী মানুষদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’’ তিনি জানান, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে তিনি তাদের দাবি পত্র পৌঁছে দেবেন মুখ্যসচিবের কাছে।
এ দিন সকাল থেকে সিউড়ি থেকে ডেউচা স্কুল মাঠ পর্যন্ত ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডে জাতীয় সড়কের দু’পাশে পুলিশের দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার জন্য সকাল থেকেই জাতীয় সড়কের উপরে এক কিলোমিটার অন্তর ছিল পুলিশি পাহারা। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ মিটিং শুরু করেন মুখ্যসচিব-সহ জেলাশাসক ও অন্য আধিকারিকেরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা মিটিং করেন তিনি। তারপর সেখান থেকেই ফিরে যান সিউড়ি।