চেন্নাইয়ের হোটেলে আটকে। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন চেন্নাই। মাঝপথে লকডাউন ঘোষণা, আর তার ফলে হোটেলে বন্দি রোগীরা। যেটুকু টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন সব শেষ হয়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও প্রায় ফাঁকা। যতটকু ছিল তাও তুলতে বাধ্য হয়েছেন বারবার এটিএম-এ যাওয়ার সমস্যার কারণে।কিন্তু এই টাকা দিয়েই বা কতদিন চলবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
লকডাউন আরও কিছুদিন চললে রাস্তায় বসতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন নলহাটি থানার সরদা গ্রামের চার অসুস্থ ব্যক্তি। তাঁরা জানান, চিকিৎসার জন্য মার্চের ১০ তারিখ চেন্নাই গিয়েছিলেন। ২৪ মার্চ ফেরার ট্রেনের টিকিট ছিল। কিন্তু লকডাউনের ফলে ট্রেন বাতিল হয়।
এখন তাঁরা চার জনই হোটেলে আটকে আছেন। বাধ্য হয়ে চেন্নাইয়ের প্রশাসনের কাছেই তাঁরা আবেদন করেন, ‘‘আমাদের কোনও রকমে থাকা খাওয়ার একটা ব্যবস্থা করে দিন। হোটেল ভাড়া এবং খাওয়ার খরচ আমরা আর চালাতে পারছি না।’’ কিন্তু এই আবেদনে এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া মেলেনি বলে দাবি করেন তাঁরা।
নলহাটির বাসিন্দা সৌমেন্দু চট্টোপাধ্যায়, মহম্মদ নূর ইসলামরা বলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যেক দিন এক হাজার টাকা হোটেল ভাড়া দিতে হচ্ছে ও নিজেদের রান্না করে খেতে হচ্ছে। কেননা এখানে হোটেলগুলিতে খাওয়ার মতো কিছুই মিলছে না। রাস্তার ধারে খাবার দোকানগুলিও বন্ধ। তার উপরে ভাষার সমস্যা তো আছেই। যে টাকা নিয়ে এসেছিলাম সব শেষের পথে। আবার শুনছি লকডাউন বাড়তে পারে।’’
তাঁদের এই অনিশ্চিত অবস্থা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখার কথাও জানান তাঁরা। সৌমেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমরা এভাবে আর পারছি না। মুখ্যমন্ত্রী মমতাদিদির কাছে আবেদন, আমাদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কিছু একটা ব্যবস্থা করুন। অথবা চেন্নাইয়ের স্থানীয় প্রশাসনকে বলুন আমাদের সাহায্য করার জন্য।’’
নলহাটি ১-এর বিডিও জগদীশচন্দ্র বাড়ুই বলেন, ‘‘যে সমস্ত মানুষজন অন্য রাজ্যে আটকে আছেন তাঁদের বিস্তারিত বিবরণ আমাদের জানালে আমরা সেই তথ্য জেলার আধিকারিকদের কাছে পাঠিয়ে দেব। সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’