আটকে থাকা শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র
দিল্লিতে আটকে থাকা মুরারইয়ের ন’জন শ্রমিক বাড়ি ফিরতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে ই-মেল করলেন। সেখানে তাঁরা দাবি করেছেন, স্থানীয় প্রশাসনের থেকে কোনও সাহায্য মিলছে না। খারাপ খাবার দেওয়া হচ্ছে। তাই দ্রুত বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক। জেলারই ১৩ জন ছাত্রী আবার নার্সিংয়ের ট্রেনিংয়ে গিয়ে আটকে রয়েছে কর্ণাটকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাড়ি ফেরানোর আর্জি রেখেছে তারাও।
মুরারইয়ের পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, লকডাউনের পাঁচ দিন আগে মুরারই বিধানসভার ন’জন শ্রমিক দিল্লির প্রতাপগঞ্জে কাজে গিয়েছিলেন। লকডাউনে আটকে পরেন। এখন বাড়ি মালিক ঘরছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসন, দুপুর ও রাতে ভাত আর ডাল দিলেও তা মুখে তোলার মতো নয় বলে ওই শ্রমিকদের দাবি।
মহম্মদ সোহেল, বসিরুদ্দিন শেখ ও লালচাঁদ শেখরা ফোনে বলেন, ‘‘খুব কষ্টের মধ্যে আছি। দু’বেলা ঠিক মতো খাবার খেতে পাচ্ছি না। ঘরমালিক দু’বেলা ঘর ছাড়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। ঘরের বাইরে পুলিশের ভয়। আর কিছু দিন চললে না খেতে পেয়ে মরে যাব। যে কোম্পানি নির্মাণ কাজের জন্য নিয়ে এসেছিল, তারা এখন ফোনটুকুও তুলছে না। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন আমাদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।’’
শ্রমিকদের পরিবার সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিওকে সমস্ত ঘটনা জানানো হয়েছে। বিডিও (মুরারই ১) নিশীথভাস্কর পাল বলেন, ‘‘ব্লকের অধীনে বিভিন্ন গ্রামের যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে আটকে আছেন, তাঁদের তালিকা করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হচ্ছে।’’
এ দিকে, জেলার ১৩ জন ছাত্রী নার্সিং-এর ট্রেনিংয়ে গিয়ে আটকে রয়েছে ব্যাঙ্গালোরের একটি কলেজের হস্টেলে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ি ফেরানোর আর্জি জানিয়েছে। এর মধ্যে মহম্মদবাজারের তিন পড়ুয়া আছে। এ ছাড়াও আছে রামপুরহাট, নানুর, রাজনগর সহ বেশ কয়েকটি জায়গার পড়ুয়ারা। এক মাসেরও বেশি সময় আটকে থাকায় হাতের টাকাও শেষ। ফলে সমস্যায় সকলেই। শুধু বীরভূম নয়। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের ১৫০ জন আটকে বলে খবর। সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দ্রুত বাড়ি ফেরার ব্যবস্থার করার আর্জি জানিয়েছে।
ছাত্রীদের মধ্যে মধুশ্রী ভট্টাচার্য, ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য ও পায়েল মণ্ডল বলে, ‘‘আট মাস আগে এসেছিলাম নার্সিং-এর ট্রেনিংয়ে। আর ফিরতে পারিনি। আর কটা দিন পরে হস্টেল ভাড়া, খাবার টাকাও থাকবে না।’’