চালকল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে আয়কর আধিকারিকদের গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
শিবানী চালকলে ঢোকার পর প্রায় ৫৩ ঘণ্টা কেটেছে। টানা তল্লাশির পর শুক্রবার বিকেলে আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষের চালকল ছাড়লেন। সঙ্গে নিয়ে গেলেন বিভিন্ন নথি। এ নিয়ে তৃতীয় দিন তন্ময়ের চালকলে চলল তল্লাশি। আর এই পুরো ঘটনায় তাঁর জেদ আরও বাড়ল বলে প্রতিক্রিয়া দিলেন বিধায়ক।
বস্তুত, বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে বিষ্ণুপুরে এসেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সভা থেকে বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময়কে খাদ্য দফতরের দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত বাকিবুরের সঙ্গে তুলনা টেনে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘বাকিবুরের মতোই এই রাইস মিলকে কাজে লাগিয়ে দুর্নীতি করেছেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ।’’ অন্য দিকে, বুধবার থেক শুক্রবার বিকেল, টানা বিধায়কের চালকলে তল্লাশি চালান আয়কর আধিকারিকেরা। সেখানে বিধায়ককে তলব করা হয়েছিল। ডাকা হয় তাঁর হিসাবরক্ষক অরূপ সামন্তকেও। একটি সূত্রে জানা যায়, দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে থাকতে পারেন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা।
যদিও আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা বেরিয়ে যাওয়ার পর একটি রাজনৈতিক সভা থেকে তন্ময় বলেন, ‘‘আমাকে হেনস্থা করা হল। আমি কোনও দুর্নীতি সঙ্গে এক শতাংশও জড়িত নই। পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে আঙুল তোলা হচ্ছে। ১৯৬৫ সালে থেকে আমাদের ব্যবসা। এমন নয় যে, তৃণমূলে আসার পর থেকে ব্যবসা করছি। তাই যত হেনস্থা করা হবে, আমাদের জেদ আরও বাড়বে।’’
এই তল্লাশি প্রসঙ্গে আগেই তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই চালকলের ব্যবসা তন্ময়ের বাবার আমলের। তাই আয়কর দফতর যত চেষ্টাই করুক, আদপে তা টিকবে না।’’
উল্লেখ্য, আগেও বিধায়ক তন্ময়ের চালকলে আয়কর হানা হয়েছে। মূলত ব্যবসায়ী তন্ময় ২০১৫ সালে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন। সে বছরই তিনি বিষ্ণুপুর পুরসভার কাউন্সিলর হন। ২০২০ সালের মে মাসে বিষ্ণুপুর পুরসভার নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হলে তাঁকে প্রশাসকমণ্ডলীতে আনা হয়। পাশাপাশি, ওই বছরই তন্ময়কে বিষ্ণুপুর শহরের যুব তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্বও দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে বিজেপিতে যোগ দেন তন্ময়। ভোটে জিতে বিষ্ণুপুর বিধানসভার বিধায়কও হন। কিন্তু, সে বছরের অগস্টে বিজেপি ছেড়ে আবার তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি।