রাস্তার মাঝে দলছুট দাঁতাল। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে গজরাজ। রাস্তার দু’দিকে দাঁড়িয়ে পড়া যানবাহনের দিকে তার থোড়াই ‘কেয়ার’। দুলকি চালে রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে সে। কিন্তু রাস্তা ছাড়ছে না। এ ভাবেই বিক্রমপুর-গড়বেতা সড়কে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে যান চলাচল বন্ধ করে দিল এক হাতি। দীর্ঘ ক্ষণ পর নিজের মর্জিতে সে রাস্তা ছেড়ে জঙ্গলে ঢুকতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন পথচারী এবং গাড়িচালকরা।
আসলে বাঁকুড়ার সারেঙ্গা রেঞ্জের জামবনির জঙ্গলে প্রায় দু’মাস ঘাঁটি গেড়ে আছে একটি দলছুট দাঁতাল। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এত দিন দাঁতালটির গতিবিধি জঙ্গলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও গত কয়েকদিন সে চলাফেরা শুরু করেছে লোকালয়েও। প্রায় দিন জঙ্গলের বুক চিরে চলে আসছে বিক্রমপুর-গড়বেতা সড়কে। সোমবার দাঁতালটি এই ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে মাঝ রাস্তায়। তার ভয়ে রাস্তার দু’দিক থেকে কেউ আর গন্তব্যের দিকে যাওয়ার সাহস করতে পারেননি। যদিও দাঁতালটি কোনও পথচারী বা যানবাহনকে আক্রমণ করেনি।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এলাকার কয়েক জন চাষি জঙ্গলপথে বাজারে সব্জি বিক্রি করতে যাওয়ার পথে হাতিটিকে দেখে তার খাবারের জন্য কিছু সব্জি রেখে যান। কিন্তু অল্প ক্ষণেই সে সব সাবাড় করে দেয়। তাঁরা মনে করছেন, খাবারের লোভেই হাতিটি জঙ্গলের ওই নির্দিষ্ট জায়গায পেরিয়ে রাস্তার উপর গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। লোকালয়ে হাতি চলে আসা নিয়ে বাঁকুড়া দক্ষিণ বনবিভাগের ডিএফওই বিজয় কুমার বলেন, ‘‘জামবনিতে যে হাতিটি রয়েছে, সেটি পাকাপাকি ভাবে ওই জঙ্গলে বসবাস করে না। বছরের বিভিন্ন সময়ে সেটি বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়খণ্ড ঘুরে বেড়ায়। সম্প্রতি ফসলেরও বেশ কিছু ক্ষতি করেছে। আমরা তার ক্ষতিপূরণও দিয়েছি। এখন হাতিটি মাঝেমধ্যেই রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। সে জন্য আমরা হুলা পার্টি মোতায়েন করার পাশাপাশি স্থানীয় এলাকার মানুষকে সচেতন করার কাজ শুরু করেছি।’’