নিজস্ব চিত্র
শিক্ষকের কাছে চুরির নালিশ করতে গিয়েছিল ছাত্রছাত্রীরা। অভিযোগ জানাতে এসে খুদেরা চিৎকার চেঁচামেচি করায় তাদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তারই প্রতিবাদে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইন-চার্জ, অর্থাৎ প্রধান শিক্ষকের অবর্তমানে যিনি স্কুলের দায়িত্বভার সামলান)-কে তালাবন্দি করে বিক্ষোভ দেখালেন খুদে পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। শনিবার পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ব্লকের মেটালা জুনিয়র হাই স্কুলে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনায় ছড়াতেই দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয় ব্লক প্রশাসনের তরফে। তার পরেই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে যেতে দেন অভিভাবকেরা।
স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আনন্দ মান্ডি নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। তারই প্রতিবাদে শনিবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অভিভাবকেরা। অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষককে না পেয়ে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অজয় মাহাতো স্কুলের একটি ঘরে তালাবন্দি করে রাখা হয়। স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুমনা তিওয়ারি বলে, ‘‘আমরা টাকা চুরির ব্যাপারে নালিশ করতে গিয়েছিলাম। ওই শিক্ষক আমাদের কোনও কথা না শুনে সবাইকে লাঠি দিয়ে প্রচণ্ড মারধর করেন। তাই আজ প্রতিবাদ করেছি আমরা।’’ ওই ছাত্রীর দাবি, আনন্দ স্কুলে কখনও-সখনও মদ্য পান করেও স্কুলে আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ওঁর কাছে পড়তে চাই না। আমরা ওঁর বদলি চাই।’’
অজয়ের অবশ্য দাবি, শুক্রবার ঘটনার সময় তিনি স্কুলে ছিলেন না। তবে আনন্দের থেকে গোটা ঘটনা শুনেছেন বলে জানান তিনি। অজয় বলেন, ‘‘অভিযুক্ত শিক্ষক মাথা ঠিক রাখতে না পেরে বাচ্চাদের মারধর করেছেন। এই ঘটনার জন্য উনি অনুতপ্ত। ওই ভুল উনি আর করবেন না বলে জানিয়েছেন।’’ এ নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে। তিনি ফোন ধরেই বলেন, ‘‘পরে কথা বলব। বাইরে আছি।’’ এর পর ফোনটি কেটে দেন তিনি।
বিক্ষোভকারী অভিভাবকদের বিরুদ্ধে অজয়কে ঘণ্টাদুয়েক আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। পরে রঘুনাথপুর ১ ব্লকের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে আসার বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। ব্লক প্রশাসনের তরফে লিখিত আশ্বাস দেওয়া হয়, অভিভাবক, অভিযুক্ত শিক্ষক ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে আগামী সোমবার একটি আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।