বাঁকুড়ার একটি দোকানে জাঙ্ক জুয়েলারি বিক্রি হয়েছে ভালই। নিজস্ব চিত্র
পুজো মানেই তাক লাগানো সাজ চাই। রূপটানে যাতে কিছু বাদ না পড়ে, তাই কসমেটিক্স থেকে জাঙ্ক জুয়েলারির দোকানে, বিউটি পার্লারে ভিড় ছিল ভালই। এ ক্ষেত্রে শহরাঞ্চল তো বটেই। সমানে পাল্লা দিয়েছে মফস্সল এলাকাও।
করোনার জেরে গত দু’বছর ধরে বিউটি পার্লার, সেলুন দীর্ঘদিন টানা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। তার মধ্যে দিয়েই বিভিন্ন পালা-পার্বন চলে গিয়েছে। দুর্গাপুজোতেও পার্লারগুলোয় ক্রেতা ছিল নগন্য। সেই ঘাটতি এ বার যেন অনেকখানিই মিটেছে।
পুরুলিয়া শহরের বিটি সরকার রোডের বিউটি পার্লারের কর্ণধার শ্রাবণী দত্ত, রঘুনাথপুর শহরের বাঁকুড়া রোডের পার্লারের কর্ণধার পদ্মা বসু বলেন, ‘‘গত দু’বছর মহিলারা সে ভাবে পার্লারে আসেনি। এ বার সেই ঘাটতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে গিয়েছে।’’
বাঁকুড়ার নতুন চটির একটি পার্লারের মালকিন মানসী পালের উচ্ছ্বাস, ‘‘মহালয়ার দিন থেকে ভিড় শুরু হয়েছিল। ষষ্ঠীর দিনে রেকর্ড ভিড় হয়। এ বার সত্যিই খুব ভাল ব্যবসা হয়েছে।’’ বিষ্ণুপুরের সঙ্কটতলার পার্লারের কর্ণধার মৈত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, করোনা সংক্রমণে রাশ পড়ায় ভাল ব্যবসার আশা করেছিলেন। যা প্রত্যাশা ছিল তার থেকেও অনেক ভাল সাড়া পেয়েছেন।
কেতাদুরস্ত হচ্ছেন পুরুষেরাও। বান্দোয়ানের একটি সেলুনের মালিক সঞ্জিত পরামানিকের কথায়, ‘‘পুজোর আগে ক’দিন কার্যত নাওয়া-খাওয়ার সময় মেলেনি। অতিরিক্ত কর্মী রাখতে হয়েছিল। ক’টা দিনে প্রায় ৪০ হাজার টাকার কাজ হয়েছে।’’
তবে পাল্লা দিয়ে প্রসাধন সামগ্রীর থেকে জাঙ্ক জুয়েলারির বাজারে বিরাট সাড়া পড়েনি। পুরুলিয়া শহরের সদরপাড়ার ইমিটেশন গয়নার দোকানের মালিক সীমা গুপ্ত জানাচ্ছেন, তাঁর প্রত্যাশামাফিক বিক্রি হয়েছে।
আবার রঘুনাথপুরের ইমিটেশন গয়নার দোকানের মালিক আশিস চন্দ্রের দাবি, ‘‘বিক্রি অতীতের তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে।’’ বান্দোয়ানের এক দোকানের মালিক ইরফান আলমও জানাচ্ছেন, আগে যেখানে এ সময়ে দৈনিক ৩০ হাজার টাকার মাল বিক্রি হত, এ বার তা কমে ২০ হাজার টাকা হয়েছে। ’’
আক্ষেপ ঝরেছে ঝালদার প্রসাধন সামগ্রী ও ইমিটেশানের দোকানের মালিক শালিগ্রাম দাঁ থেকে পুরুলিয়ার কাপড়গলি এলাকার প্রসাধনসামগ্রীর দোকানের মালিক মনোজ শর্মার গলাতেও। তাঁদের দাবি, ‘‘আরও কয়েকদিন সময় পেলে বিক্রি আরও বাড়ত।’’
বাঁকুড়ায় আবার জাঙ্ক জুয়েলারির চাহিদা ভালই জমেছিল। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, নানা ধরনের গলার হার, কানের, চুলে বাঁধার ক্লিপ ভালই বিক্রি হয়েছে। বাঁকুড়ার বড়কালীতলা এলাকার জাঙ্ক জুয়েলারির ব্যবসায়ী আশিস দাস বলেন, ‘‘২৫ হাজার টাকার জাঙ্ক জুয়েলারি এনেছিলাম। পুজোয় প্রায় সমস্তই বিক্রি হয়ে গিয়েছে।’’
পাশাপাশি হেয়ার কালারের চাহিদাও এ বার তুঙ্গে উঠেছিল। বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ এর সুমন্ত কুম্ভকার বলেন, ‘‘গত দুবছর চরম ক্ষতি হলেও এ বার বিক্রি ভালই হয়েছে।’’ তবে অনলাইন-বাজার যে প্রসাধনী সামগ্রীর মার্কেটে থাবা বসাচ্ছে, মানছেন অনেক ব্যবসায়ীই।