ওজন নেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
করোনা-পরিস্থিতিতে গত এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সেগুলির আওতায় থাকা অপুষ্ট শিশুদের স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা জানতে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষার কাজ শুরু করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে গোটা জেলা জুড়েই এই কাজ শুরু হয়েছে। পুরুলিায়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, কোনও শিশু এখন অঙ্গনওয়াড়িতে আসছে না। তাই বাড়ি বাড়ি ঘুরে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা অপুষ্ট শিশুর ওজন বা হাতের মাপ নেবেন।
জেলা সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক আনজুম রুমান বলেন, ‘‘গত ফেব্রুয়ারির সমীক্ষা মোতাবেক অপুষ্ট শিশুদের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। তার পরে আর কোনও তথ্য নেই। তাই অপুষ্ট শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওজন নেওয়া এবং মধ্যবাহুর মাপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, এর ফলে বোঝা যাবে সেই সময় যে শিশু অপুষ্ট ছিল বর্তমানে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ঠিক কেমন।
প্রতি মাসে অপুষ্ট শিশুদের স্বাস্থ্যের কতটা উন্নতি হল, তা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ব্লকে রিপোর্ট দাখিল করে জানায়। সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারির সমীক্ষা মোতাবেক পুরুলিয়ায় অতি অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা ছিল ২,১১০ জন। মাঝারি অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা ছিল ৩৫,৮৬৫ জন। সব মিলিয়ে ওই ৩৭,৯৭৫ জনের স্বাস্থ্যের কতটা উন্নতি হল, সেটাই এখন জানতে চাইছেন সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিকেরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার ১৭০টি পঞ্চায়েত ও ৩টি শহর মিলে মোট ৪,৮৩৩টি অঙ্গনওয়াড়ি রয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলির আওতায় রয়েছে আড়াই লক্ষের বেশি শিশু। কেন্দ্রগুলির দরজা বন্ধ থাকলেও আওতায় থাকা শিশু, গর্ভবতী ও প্রসূতিদের গত এপ্রিল থেকেই মাসে দু’কেজি করে চাল ও আলু দেওয়া হচ্ছে। জুন-জুলাইয়ে তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৩০০ গ্রাম করে মুসুর ডাল। পাশাপাশি, পুরুলিয়ার অপুষ্ট শিশুদের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক কেজি করে ‘রেডি-টু-ইট’ নামে বিশেষ পুষ্টিকর ছাতুও দেওয়া হচ্ছে।
পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর জানান, ওই পুষ্টিকর ছাতু দেওয়া আপাতত চলবে।