চলছে নমুনা সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র
বাঁকুড়া মেডিক্যালে মৃত করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তির গ্রামে গিয়ে বৃহস্পতিবার বাসিন্দাদের একাংশের পরীক্ষা করাল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। কয়েকজনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়, কয়েকজনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষা করা ৮০ জনের মধ্যে এক জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। এই ঘটনায় বাঁকুড়া মেডিক্যালের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট মৃতের পরিজনেরা। তাঁরা উপযুক্ত তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার দাবি তুলেছেন।
পুরুলিয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘বাঁকুড়া থেকে বিষয়টি জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিএমওএইচকে ওই এলাকায় গিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।’’ বিএমওএইচ (রঘুনাথপুর ১) কিংশুক কর্মকার বলেন, ‘‘আগেই ওই গ্রামের কয়েকজনের করোনা ধরা পড়েছে। তাই আগে থেকেই এ দিন ওই গ্রামে গিয়ে অন্য বাসিন্দাদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা ও লালরসের নমুনা সংগ্রহ করার কথা ছিল। তারই মধ্যে স্থানীয় ভাবে খবর আসে, ওই গ্রামের এক ব্যক্তির বাঁকুড়া মেডিক্যালে মৃত্যু হয়েছে। পরে তাঁর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তাই মৃতের সংস্পর্শে আসা লোকজন-সহ অন্যদের পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনের অ্যান্টিজেন রিপোর্ট পজ়িটিভ পাওয়া গিয়েছে।’’
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নার্ভের সমস্যা নিয়ে দিন দশেক আগে ওই ব্যক্তিকে প্রথমে রঘুনাথপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে পুরুলিয়া মেডিক্যাল ঘুরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রাতে দেহ পরিবারের লোকজনকে দেওয়া হয়। বুধবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যাল জানতে পারে, ওই ব্যক্তির করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ।
এ দিকে, স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির দেহ মঙ্গলবার সারা রাত বাড়িতেই ছিল। তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে এবং পরদিন ভোরে শ্মশানে অনেকে ভিড় করেছিলেন। ফলে, ওই ব্যক্তির করোনা হয়েছিল জানার পরে তাঁর দেহের সংস্পর্শে আসা লোকজন উদ্বেগে রয়েছেন।
কোভিড পরীক্ষার পরেও রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা না করে দেহ কেন পরিবারকে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের আত্মীয় ও গ্রামবাসীদের একাংশ। গ্রামের বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান মধুসূদন দাস বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ধরনের ভুল মানা যায় না। অনেকেই তাঁর দেহের সংস্পর্শে এসেছিলেন। সবাই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।’’
মৃতের আত্মীয় চন্দন বাউরি বলেন, ‘‘অমার্জনীয় ভুল করেছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কে বা কাদের দোষে এমন ঘটনা ঘটেছে, উপযুক্ত তদন্ত করে তা বার করা দরকার।’’
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, কার গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটেছে, মূলত সেটারই তদন্ত শুরু হয়েছে। বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার তরুণ পাঠক বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। রিপোর্ট হাতে আসেনি।”