সাঁইথিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
বাস চালু হওয়ার খবর শোনার পর থেকেই আশায় বুক বেঁধে ছিলেন হকাররা। কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি। কারণ বাস চালু হলেও যাত্রী নেই বললেই চলে। ফাঁকা বাসস্ট্যান্ডে জিনিসপত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ানোই সার হচ্ছে তাঁদের। দিনের শেষে পেটের ভাতের সংস্থানটুকুও হচ্ছে না।
জেলার বিভিন্ন জায়গায় বাসস্ট্যান্ডে ও বাসে বিভিন্ন রকম জিনিস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন অনেক হকার। কিন্তু লকডাউনের কারণে এতদিন তাঁদের হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হয়েছিল। বাস চলাচলের খবর শুনে রোজগার কিছুটা হলেও ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছিলেন তারা। কিন্তু বাসে যাত্রীর দেখা নেই বলে তাঁরা এখনও সঙ্কটেই।
জেলা বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁইথিয়া থেকে বিভিন্ন রুটে ২০টি বাস চালু হয়েছে। কীর্ণাহার থেকে চালু হয়েছে প্রায় ২০টি বাস। সাইথিয়া বাস মালিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক পতিতপাবন দে ও কীর্ণাহার বাসমালিক সমিতির অন্যতম সদস্য নারায়ণ দাস বলছেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় পারতপক্ষে কেউ বাড়ি থেকে বের হতে চাইছেন না। তাই অধিকাংশ বাসই ফাঁকা যাওয়া আসা করছে। বাসস্ট্যান্ডও খাঁ খাঁ করছে।’’
হকারদেরও রোজগারও তাই চালু হয়নি। সাঁইথিয়া বাসস্ট্যান্ডে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন শুভাশিস চন্দ্র। লাভপুরে চিড়েভাজা বিক্রি করেন রবীন দত্ত৷ তাঁদের কথায়, ‘‘জিনিসপত্র নিয়ে আসা যাওয়াই সার হচ্ছে। নিজের পেটের ভাতটুকু পর্যন্ত হচ্ছে না। যাত্রীই নেই, জিনিসপত্র কিনবে কে?’’ সাঁইথিয়া হকার্স ইউনিয়নের সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী, আমোদপুরের সুরেশ দাসরা জানান, তাঁদের এলাকায় প্রায় ২৫-৩০ জন হকার বাসে বাসে জিনিস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। লকডাউনে চরম সমস্যায় পড়েছিলেন তাঁরা। বাস চালু হওয়ার পরও দুর্ভোগ ঘোচেনি।
নানুরের পলাশ দাস, কীর্ণাহারের বাবু সাহাদের অবস্থা আরও খারাপ। তাঁরা বিক্রি করেন কলা আর শশা। তাঁরা জানান, লকডাউনে বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে সঞ্চয় সব শেষ হয়ে গিয়েছে। তাঁদের কথায়, ‘‘বাস চালু হওয়ায় ধারদেনা
করে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। কিন্তু যাত্রীর অভাবে মাল বিক্রি হচ্ছে না। বেশিরভাগেই পচন ধরে যাচ্ছে। এখন ধার শোধ করব কী করে তাই ভেবে পাচ্ছি না।’’