আক্রান্ত: বিষ্ণুপুর হাসপাতালে গুরুপদ মেটে। ছবি: শুভ্র মিত্র।
রাজ্য নেতারা বারবার নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর। কিন্তু, তাতে কাজ যে বিশেষ হচ্ছে না, তা ফের স্পষ্ট হল ইন্দাসে তৃণমূলের সম্মেলনে। বুধবার ওই সম্মেলনে নিজের অনুগামীদের নিয়ে ঢুকতে গিয়ে স্থানীয় বিধায়ক গুরুপদ মেটে আক্রান্ত হলেন তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর হাতে।
ঘটনা হল, এই জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকড় কতটা গভীর, তা গত বিধানসভা নির্বাচনেই টের পেয়ে গিয়েছেন তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব। বিধানসভা ভোটে জেলায় পাঁচটি আসন হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। সব ক্ষেত্রেই পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীরা হারের জন্য দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছিলেন। দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় সাত জনের একটি কোর কমিটি গড়ে দিয়েছেন। তার পরেও কাজ হয়নি। কম বেশি জেলার ২২টি ব্লকেই শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই দ্বন্দ্ব মেটানোর লক্ষেই সোমবার থেকে প্রতি ব্লকে তিন দিন ব্যাপী সম্মেলনের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। ইন্দাসের এ দিনের ঘটনা নেতৃত্বের সেই উদ্যোগে ভাল রকম চোনা ফেলল বলে অভিমত দলেরই একটা বড় অংশের। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বড় অংশের কর্মীদের অভিযোগ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনাকে খাটো করে দেখে আখেরে সমস্যাই বাড়াচ্ছেন নেতারা। এর আগে পাত্রসায়র, বিষ্ণুপুর, ইন্দাস ব্লক একাধিকবার রক্তাক্ত হয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ ঘটনাগুলিকে ‘বড় সংসারের ছোটখাটো মনোমালিন্য’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এ বার অবশ্য অরূপবাবু কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, “ইন্দাসের ঘটনাটি নিয়ে আমি রাজ্যে রিপোর্ট করেছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেব।’’ জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি অরূপ চক্রবর্তীর বক্তব্য, “একনিষ্ঠ কর্মী হয়ে থাকলে দলে জায়গা হবে, না হলে নয়।’’