রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র
বীরভূমে এসে লাদাখে ভারত-চিন সংঘর্ষে নিহত সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাংয়ের পরিবারের সঙ্গে শুক্রবার দেখা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজেশের বীরত্বকে সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাজেশ ওরাং বীরভূমকে বীরভূমি করে দিয়েছেন।’’ রাজেশের পরিবারের হাতে তিনি এগারো লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ দিনই রাজেশের পরিবারকে ৪০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। ঘোষিত সফরসূচি অনুযায়ী এ দিন সকাল ১০টা বেজে ২০ মিনিটে কপ্টারে করে সিউড়ি চাঁদমারি মাঠে এসে পৌঁছন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সেখান থেকে তিনি গাড়িতে রাজেশের গ্রাম, মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়ার উদ্দেশে রওনা হন। ১০টা ৪০ নাগাদ তিনি রাজেশের বাড়িতে এসে পৌঁছন।
এ দিন রাজ্যপাল ও তাঁর স্ত্রী বেলগড়িয়া গ্রামে পৌঁছে প্রথমে রাজেশের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। রাজেশের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান এবং তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন। এরপর বাড়ির উঠোনে রাজেশের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন। সেখান থেকে তাঁরা পাশেই তৈরি অস্থায়ী সভাঘরে যান। সেখানে তিনি রাজেশের পরিবারের হাতে এগারো লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। তারপর তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রেখে ১১টা ২০ মিনিটে পুনরায় সিউড়ি রওনা হন।
রাজ্যপাল বলেন, ‘‘রাজেশ ওরাং বীরভূমকে বীরভূমি করে দিয়েছেন। রাজেশ ওরাং দেশের জন্য নিজের প্রাণ দিয়েছেন। রাজেশ ওরাং শিক্ষা দিয়েছেন নেশন অলওয়েজ বেস্ট।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই সুপুত্র বীরভূমের যেখানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন স্থাপন করেছেন। একান্ন পীঠের মধ্যে পাঁচ পীঠ এখানে রয়েছে। এখানে রয়েছে কয়লা, বালি এবং খড়িমাটি। এখানে কত মহাপুরুষ রয়েছেন। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন এখানকার। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানকার।’’
রাজ্যপালের জন্য এ দিন সকাল থেকে সিউড়ি শহরে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। যে পথ ধরে রাজ্যপাল রাজেশের গ্রাম গিয়েছেন সেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। সিউড়ি শহরে টোটো বন্ধ রাখা হয়েছিল। রাজেশের গ্রামেও কড়া পুলিশি ব্যবস্থা ছিল। রাজ্যপালের কর্মসূচিতে সেনাকর্তারা ছাড়া কেবল উপস্থিত ছিলেন সিউড়ি সদরের মহকুমাশাসক রাজীব মণ্ডল, মহম্মদবাজারের বিডিও ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এসডিপিও।
এ দিনই সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রাজেশের পরিবারের হাতে ৪০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। রাজেশের পরিবারের সদস্যদের দাবি, এ দিন রাজ্যপালের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সেনাপ্রধান। তিনি রাজেশের পরিবারের সদস্যদের জানান, পরিবারের কেউ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতে চাইলে তাঁকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। রাজেশের জেঠতুতো ভাই অভিজিৎ ওরাং সেই চাকরি করতে ইচ্ছুক। তাঁর কথায়, ‘‘যদি সুযোগ পাই তাহলে আমি সেনাবাহিনীতে যোগ দেব।’’