বিয়ের সাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাস্কও। মঙ্গলবার রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
রাজ্য সরকারের ঘোষিত পূর্ণ লকডাউনের সঙ্গেই রামপুরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ অংশে পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিল বীরভূম জেলা প্রশাসনও। গত সাত দিনে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশকর্মী, বিডিও। মঙ্গলবারও ময়ূরেশ্বরে চিকিৎসকের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। রামপুরহাট মহকুমায় সংক্রমণ ঠেকাতেই প্রশাসনকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৬ অগস্ট, বৃহস্পতিবার ও ৭ অগস্ট, শুক্রবার লকডাউন হবে। রামপুরহাট পুরসভা এবং নলহাটি পুরসভা এলাকা-সহ রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ৮টি ব্লকের মধ্যে ৬টি ব্লকে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যে ৬টি ব্লক নতুন করে লকডাউনের আওতার মধ্যে পড়ছে সেগুলি হল রামপুরহাট ১, মুরারই ১, মুরারই ২, নলহাটি ১, নলহাটি ২ ও ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক। ওই সমপ্ত এলাকাতেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। ওই এলাকাগুলিতে আগামী ৬ অগস্ট ও ৭ অগস্ট সকাল ৬টা থেকে রাত্রি ১০টা পর্যন্ত লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।
রামপুরহাট এবং নলহাটি পুরসভা এলাকা ছাড়া সিউড়ি, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর ও বোলপুর এই ৪টি পুরসভা এলাকায় ৬ ও ৭ অগস্ট দুপুর ২টো থেকে রাত্রি ১০টা পর্যন্ত লকডাউনের নির্দেশ জারি করেছেন জেলাশাসক। জেলাশাসক জানান, জেলার অন্য বাজার, গ্রামীণ হাট, মার্কেট কমপ্লেক্সেও ৬ ও ৭ অগস্ট দুপুর ২টো থেকে ১০ টা পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকবে। লকডাউনের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সম্পূর্ণ লকডাউনের নির্দেশ যেখানে জারি করা হয়েছে সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা, ওষুধের দোকান খোলা থাকার পাশাপাশি কৃষি কাজ, আন্তঃরাজ্য পণ্য পরিবহন, রেশন দোকান, হোম ডেলিভারি পরিষেবা চালু থাকবে।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪৬ জন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে স্বাস্থ্য জেলায় ১৫০ জন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার চিকিৎসক সহ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের কর্মী যেমন আছে তেমনি বিডিও, যুগ্ম বিডিও এবং বিডিও অফিসের কর্মীরাও আছেন। আক্রান্তের তালিকায় পুরসভার কাউন্সিলরও আছেন। এ দিন ময়ূরেশ্বরের ষাটপলসায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯৬। এঁদের মধ্যে ১৩ জন রামপুরহাট কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারাপীঠ ঢোকার আগে সেফ হোমে ৯৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার এক আধিকারিক জানান, করোনা সন্দেহে টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সপ্তাহে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় র্যাপিড টেস্ট শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে র্যাপিড টেস্টে ১৫ জন করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বেশির ভাগ করোনা আক্রান্ত উপসর্গহীন হওয়ার জন্য তারাপীঠ সংলগ্ন সেফ হোমে উপসর্গহীন এবং মৃদু উপসর্গ আছে এমন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।