শালতোড়ায় বিস্ফোরণে ঝলসে যাওয়া বাইক। নিজস্ব চিত্র
বিস্ফোরণের পরে চার দিন পার হয়ে গেলেও শালতোড়ায় তদন্তে এল না ফরেন্সিক দল। এ দিকে জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি লেগেই রয়েছে। ফলে পুলিশ ওই ঘটনাস্থল ঘিরে রাখলেও বৃষ্টির জলে তথ্য প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে বিভিন্ন মহল।
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের প্রশ্ন, “এই তো পুলিশের তদন্তের হাল! বিস্ফোরণের চার দিন পরেও কি ধরনের বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেটাই জানতে পারেনি। ফরেন্সিক দলও আসেনি। বৃষ্টিতে সমস্ত তথ্য প্রমাণ ধুয়ে যাওয়ার পরে কি ওই দল আসবে? তখন তারা কী খুঁজে পাবে?’’
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারির অবশ্য দাবি, “ঘটনাস্থল আমরা ঘিরে রেখেছি। ঘটনাস্থলের ভিডিয়োগ্রাফিও করে রেখেছি। স্থির ছবিও তোলা আছে। তাছাড়া যে মোটরবাইকে বিস্ফোরণ হয়েছিল সেটিও আমাদের কাছে আছে। ফলে ফরেন্সিক দলের তদন্তের জন্য দরকারি তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।”
শুক্রবার রাতে ছাতনা-শালতোড়া সড়কে শালতোড়ার লাউপাহাড়ি এলাকায় একটি চলন্ত মোটরবাইকে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মোটরবাইক চালক শালতোড়ার ঝনকার বাসিন্দা জয়দেব মণ্ডলের (৫৩) মৃত্যু হয়। পুলিশ জয়দেবের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক পরিবহণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার রাতেই এক্স হ্যান্ডেলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, শালতোড়ায় অবৈধ পাথর খাদানে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্যই ওই বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ঘটনায় এনআইএ তদন্তেরও দাবি তোলেন তিনি। যদিও মৃতের পরিবার বিস্ফোরক পরিবহণের অভিযোগ মানতে চাননি।
এ দিকে পুলিশ জানিয়েছিল, কী বিস্ফোরক ছিল, তা জানতে ফরেন্সিক তদন্ত করানো হবে। যদিও মঙ্গলবার পর্যন্ত ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে আসেনি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কেন দেরি করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
জয়দেব অবৈধ বিস্ফোরক বেচাকেনা চক্রের সাথে জড়িয়ে ছিলেন কি না, কোথা থেকে বিস্ফোরক সংগ্রহ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না সে সব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পুলিশের একটি বিশেষ সূত্রে দাবি, জয়দেবের মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড ও টাওয়ার ‘লোকেশন’ তদন্ত করে পুলিশ বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। কোথা থেকে ওই বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হয়েছিল, আরও কেউ এই ঘটনায় যুক্ত কি না তা নিয়েও পুলিশের তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ হাতে এলেই এই ঘটনায় বড় পদক্ষেপ করা হবে বলে দাবি তদন্তকারীদের একাংশের।
পুলিশ সুপার বলেন, “অনেক তথ্যই আমাদের কাছে উঠে এসেছে, সঠিক সময়ে আমরা পদক্ষেপ করব। এই ঘটনায় নানা দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে।”