চাকরির দাবিতে আন্দোলনে প্রাক্তন মাওবাদী সদস্যরা। —নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে চাকরি না দিলে ফের বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন প্রাক্তন মাওবাদী সদস্য এবং লিঙ্কম্যানরা। সোমবার পুরুলিয়া জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি জমা দিলেন তাঁরা। সেখানে বোরো, বান্দোয়ান, বরাবাজার, বলরামপুর, আড়শা, বাঘমুন্ডি বলরামপুরে এক সময় মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সদস্যরা ছিলেন। সম্প্রতি জেলা সফরে এসে সমাজের মূল স্রোতে ফেরা মাওবাদীদের চাকরির বিষয়টি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাস তিনেক আগে বলরামপুরে তৃণমূলের ছত্রছায়ায় প্রথম মিছিল করেন এই আন্দোলনকারীরা চাকরির দাবি তোলেন। এর পর তাঁরা বরাবাজার থানার বেড়াদাতে একটি সভাও করেন। সেখানে দেখা যায় মাওবাদীদের সমর্থক আদিবাসী মূলবাসী জনগণের কমিটির এক সময়ের নেতা অঘোর হেমব্রমকে। কিন্তু সোমবারের এই জমায়েতে বিক্ষোভ ছিল সরকারের বিরুদ্ধেই। সেখানে সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা চাকরি দাবির প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দেখা গেল আন্দোলনকারীদের। তাঁদের মধ্যে থেকে একটি প্রতিনিধি দল জেলাশাসককে স্মারকলিপি জমা দেয়।
জমায়েতে ছিলেন পুলিশের গুলিতে নিহত অযোধ্যা স্কোয়াডের মাওবাদী সদস্য আড়শা থানার পাথরডি গ্রামের সুবল মাহাতোর বাবা চেপু মাহাত। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, “আমার ছেলে মাওবাদী ছিল। পুলিশের গুলিতে মারা যায়। আমরাও সেই পার্টি করতাম। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল আত্মসমর্পণ প্যাকেজের এবং চাকরির। কিন্তু কিছুই পাইনি। যদি চাকরি না পাই তাহলে আবার পার্টি বেড়ে চলবে, বাড়াব।”
তবে শুধু নিজেদের চাকরির দাবিই নয়, শাসক দলের নেতা এবং সরকারি আধিকারিকদের উপরেও ক্ষোভ রয়েছে বলে অভিযোগ। আড়শা থানার হেরোদি গ্রামের বাসিন্দা নিবারণ গড়াই ক্ষোভের সঙ্গে হুশিয়ারি দেন, “অনেককে পয়সা নিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। আমরা অরিজিনাল তবুও চাকরি পাইনি। আমরা যদি চাকরি না পাই ফের মাওবাদী আন্দোলনে শামিল হব। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করব।”
পুরুলিয়া জেলা শাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “একটা স্মারকলিপি পেয়েছি। গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।” পুরুলিয়া পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, “জেলাশাসককে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে শুনেছি। গোটা বিষয়টি আলোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”