বাঘমুণ্ডিতে বনকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েকদিন ধরে রাঢ়বঙ্গের বিভিন্ন বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চিন্তায় পড়েছে বন দফতর। আগুনের গ্রাস থেকে জঙ্গল ও বন্যপ্রাণকে বাঁচাতে প্রচারকেই হাতিয়ার করছে তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুরুলিয়া বন বিভাগের অন্তর্গত বাঘমুণ্ডি বনাঞ্চল কর্তৃপক্ষ তাঁদের এলাকার জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে প্রচার শুরু করেছেন। বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, সচেতনতা গড়তে এ দিন বাঘমুণ্ডি রেঞ্জ এলাকার জঙ্গল লাগোয়া কালিমাটি, বাঁধডি, পিড়রগড়িয়া-সহ ১৭টি গ্রামে মাইকে প্রচার হয়েছে। বাঘমুণ্ডির রেঞ্জ অধিকারিক মনোজকুমার মল্ল জানান, জঙ্গলে নজরদারি চলছে। সচেতনতা প্রচারের উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এ ধরণের প্রচার এখন থেকে নিয়মিত ভাবে চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কী ভাবে চলছে প্রচার?
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে গিয়ে বনকর্মীরা বলছেন, ‘অযথা জঙ্গলে ঘোরাঘুরি করবেন না। জঙ্গলে আগুন লাগাবেন না। আগুন লাগানো কিংবা পশুপাখি শিকার ভারতীয় বন আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। সেই অপরাধ করলে বন দফতর কড়া ব্যবস্থা নেবে’। ডিএফও (পুরুলিয়া) রামপ্রসাদ বাদানা জানিয়েছেন, জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনাগুলি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঝালদা, কোটশিলা কিংবা বাঘমুণ্ডির মতো বনাঞ্চলে সম্প্রতি কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ি পথ পেরিয়ে আগুন নেভাতে সেখানে পৌঁছাতে পারেনি দমকলের ইঞ্জিন। বন দফতরের কর্মীরাই বনসুরক্ষা কমিটির লোকজনদের সাহায্যে কোনও রকমে আগুন নিভিয়েছেন।
এই সময় প্রত্যেক বছর জঙ্গলে আগুন লাগে। জঙ্গলে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, পুরুলিয়া বন বিভাগের এমন এক আধিকারিক জানান, অনেকে জঙ্গলে শুকনো পাতার উপরে জ্বলন্ত বিড়ি বা সিগারেটের টুকরো ফেলে দেন। তা থেকে আগুন ধরে যায়। আবার গত কয়েকবছরে দেখা গিয়েছে, কিছু মানুষ মহুল সংগ্রহের জন্য গাছের নীচে আগুন ধরিয়ে দেয়। চোরাশিকারিরাও অনেক সময় জঙ্গলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আতঙ্কে বন থেকে বেরিয়ে আসা পশুদের শিকার করে তারা। এমন নজিরও অনেক রয়েছে বলে দাবি দফতরের।