বণ্যপ্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় পশু চিকিৎসকদের পরামর্শে লবণ আর ভেজা ছোলা দিচ্ছে বনদফতর। — নিজস্ব চিত্র।
গত এক সপ্তাহ ধরে বাঁকুড়ায় লাগাতার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে ৪০ ডিগ্রির উপর। তীব্র তাপপ্রবাহ, চড়া রোদ আর প্রবল গরমে নাজেহাল বাঁকুড়ার জয়পুর জঙ্গলের পশুপাখিও। শুকিয়ে কাঠ জঙ্গলের পুকুর ও জলাশয়। এই পরিস্থিতিতে জয়পুর জঙ্গলের বণ্যপ্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় পশু চিকিৎসকদের পরামর্শে লবণ আর ভেজা ছোলা দিচ্ছে বনদফতর। ট্র্যাপ ক্যামেরায় নজরদারি চালিয়ে সন্ধান চালানো হচ্ছে নতুন প্রজাতির অস্তিত্বও।
বাঁকুড়ার জয়পুর জঙ্গল শুধু বন্যপ্রাণে সমৃদ্ধ নয়, পর্যটনের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই জঙ্গলে তিনশোর বেশি চিতল হরিণ রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে খরগোশ, গন্ধগোকুল, প্যাঙ্গোলিন এবং বিভিন্ন ধরনের শেয়াল ও অসংখ্য সরীসৃপ। বন্যপ্রাণীর পানীয় জলের চাহিদা পূরণ করে জঙ্গলের ভিতর থাকা একাধিক জলাশয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে ভারী বৃষ্টির অভাব এবং প্রবল তাপপ্রবাহের জেরে জয়পুর জঙ্গলের অধিকাংশ জলাশয়ই শুকিয়ে গিয়েছে। যার জেরে জঙ্গলে বন্যপ্রাণীদের পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বন্যপ্রানীদের পর্যাপ্ত পানীয় জল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রবল গরমে ডিহাইড্রেশান বা হিট স্ট্রোকের হাত থেকে বন্যপ্রাণকে বাঁচাতে পশু চিকিৎসকদের পরামর্শে জঙ্গলের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দেওয়া হচ্ছে বিশেষ ধরনের লবণ ও ভেজা ছোলা। ওই নির্দিষ্ট জায়গায় ট্র্যাপ ক্যামেরার সাহায্যে ২৪ ঘন্টা নজরদারি চালাচ্ছে বন দফতর।
বিষ্ণুপুর বন বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, ‘‘বাঁকুড়ার মাটি ল্যাটেরাইট প্রকৃতির হওয়ায় এমনিতেই জঙ্গলের ভিতরে থাকা জলাশয়গুলির জল শুকিয়ে গেছে। ফলে চিতল হরিণ-সহ অন্যান্য জীবজন্তুর পানীয় জলের সমস্যা তৈরি হয়েছে। গ্রীষ্মের সময় সুস্থ থাকার জন্য বন্যপ্রাণীদের শরীরে প্রয়োজন হয় পানীয় জল ও বিশেষ ধরনের লবণের। জঙ্গলের ভিতর নির্দিষ্ট জায়গায় আমরা সেই জল, লবণ এবং শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য ভেজা ছোলা নিয়মিত রেখে দিচ্ছি। ওই জায়গাটিকে ট্র্যাপ ক্যামেরার নজরদারির মধ্যে রেখে জঙ্গলের মধ্যে আর কী কী প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, তার রেকর্ড রাখছি।’’