গ্রেফতার অনুব্রত। ফাইল চিত্র
‘দাদা’ যদি হেফাজতে থাকেন, তাঁরা তবে কী করবেন?
অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই গ্রেফতার করার পরে বীরভূমে তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের এখন এমনই দিশাহারা অবস্থা। কেউ কেউ এখনও সভা, মিছিলে আসছেন ঠিকই, তবে, সেই তেজ আর নেই। জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, কেষ্ট ঘনিষ্ঠরা অনেকেই এখন সন্তর্পণে জল মাপতে চাইছেন। তবে প্রকাশ্যে এসে কেউ কোনও হুমকি, হুঁশিয়ারিও দিতে চাইছে না।
তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, দাদা-ঘনিষ্ঠদের এই দলে এমন লোকজনও আছেন, যাঁরা ভোটের সময়ে বা যে কোনও ‘অপারেশনে’ অস্ত্র হাতে সামনে থেকেছেন। ওই সব সূত্রের আরও দাবি, তাঁদের আবার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ছিল কোথাও ব্লক সভাপতি, কোথাও অঞ্চল সভাপতির উপরে। তাঁরা বেশিরভাগই ‘দাদা’ গ্রেফতার হতে কিছুটা হতোদ্যম হয়ে পড়েছেন।
এই দলের এক জন বলছিলেন, ‘‘দাদা গ্রেফতার হওয়ার পরে অনেক টিটকারি শুনছি। ‘অ্যাকশন’ নিতে ইচ্ছে করলেও ভাবতে হচ্ছে, ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লে সেখান থেকে মুক্তি পেতে কার শরণাপন্ন হব।’’ আর একজন জানাচ্ছেন, অপারেশনে নেতৃত্ব দিতে কারা পটু, সেটা তো ব্যক্তিগত ভাবে জানতেনই, প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকা ধরে ধরে ‘কাজের লোক’দের চিনতেন কেষ্টদা। ‘সুবিধা-অসুবিধা’ দেখতেন।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তল্লাশির পর অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ী মহম্মদবাজারে তাঁর বিশ্বস্ত লোকজন পরিবেষ্টিত হয়ে থাকা এই মুহূর্তে সবচেয়ে ‘নিরাপদ’ বলে মনে করছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া আটকাতে যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তিনি সিউড়ি শহর ঘেঁষা একটি অঞ্চলের দাপুটে নেতা হলেও এখন চুপ। পাচার কারবারে বেশ কিছুটা লাগাম টানা হয়েছে।
সিবিআই সূত্রের দাবি, অনুব্রতকে জেরা করে বীরভূম ও পড়শি মুর্শিদাবাদের ১৪ জনের নাম মিলেছে, যাঁরা মূলত সেহগাল হোসেনকে গরু পাচার করার ক্ষেত্রে নানাভাবে সাহায্য করতেন। এই ১৪ জনের মধ্যে ইলামবাজারের দুই তৃণমূল নেতা, দুবরাজপুর এলাকার দুই প্রভাবশালী, সিউড়ির এক যুব নেতা, সিউড়ির এক ব্যবসায়ী, নানুর, বোলপুর, মহম্মদবাজারের একাধিক পুলিশ কর্মী রয়েছেন। জেলার ওই নেতাদের অনেককেই এখন প্রকাশ্যে সে-ভাবে দেখা যাচ্ছে না।