শুক্রবার থেকে শুরু হল স্কুল। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে কোভিড বিধি মেনে চলার চেষ্টার ছবি দেখা গিয়েছে জেলার প্রায় সর্বত্রই।
কোথাও স্কুলের গেটে স্যানিটাইজার হাতে দাঁড়িয়ে শিক্ষক। তখন পাশেই চলছে থার্মাল স্ক্রিনিং। প্রায় ১১ মাস পরে শুক্রবার ধর্মঘটের দিনে খুলে গেল বীরভূমেও স্কুলও। বহু স্কুল ঘুরে দেখা গিয়েছে প্রায় সর্বত্র কোভিড সতর্কতার ছবি ছিল চোখে পড়ার মতো।
স্কুল ঘুরে দেখা গেল, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মতোই কোথাও এক বেঞ্চে দু’জন আবার কোথাও এক জন করে পড়ুয়াদের ক্লাসরুমে বসানো হয় এ দিন। কোথাও ক্লাস শুরুর আগে করোনা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতনতার পাঠ দিতে দেখা গেল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তবে দীর্ঘ ১১ মাস পেরিয়ে স্কুল খোলায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি স্কুলের পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বোলপুর গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা শুক্লা চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাশ্রী দাসরা বলেন, “এত দিন অনলাইনে ক্লাস করানো হচ্ছিল ঠিকই। কিন্তু তাতেও কোথাও খামতি থেকেই যাচ্ছিল। কর্মক্ষেত্রে
আবার নতুন উদ্যমে ফিরতে পেরে আমরা খুব খুশি।” একই কথা শোনা গিয়েছে পড়ুয়াদের মুখেও। দশম শ্রেণির ছাত্রী শ্রেয়শী মণ্ডল, সায়নী ঘোষ, পারমিতা দাসরা বলেন, “টিউশন আগেই শুরু হয়েছিল। এ বার এত দিন পেরিয়ে স্কুলে আসতে পেরে ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় ভাল লাগছে।’’ বোলপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী তিতলি হাজরার কথায়, ‘‘আজ বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে আবারও স্কুলে বসে আগের মতো ক্লাস করব, বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোড় করতে পারব। একেবারে অন্য অনুভূতি হল।”
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ধীরে ধীরে সমস্ত কিছু স্বাভাবিক হলেও টানা ১১ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের অনেকের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমতে শুরু করেছিল। স্মার্টফোন না থাকায় অনেক পড়ুয়া স্কুলে গিয়ে ক্লাস শুরুর অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে বসেছিল। বন্ধুদের থেকে দূরে থাকা, স্কুলের আনন্দ হইহুল্লোড় থেকে দূরে থেকে মনভার ছিল অনেকের। স্কুল খোলায় খুশি সকলেই।
তবে এ দিন উপস্থিতি ছিল বেশ কম। বোলপুর, সিউড়ি, রামপুরহাট, দুবরাজপুর, ইলামবাজার, মহম্মদবাজার ও নলহাটির স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের তেমন উপস্থিতি চোখে পড়েনি। কোথাও ৩০ শতাংশ আবার কোথাও ৩৫ শতাংশ পড়ুয়া নিয়েই শেষ হয় প্রথম দিনের পঠন-পাঠন। বহু অভিভাবককেই এ দিন পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে দিতে দেখা যায়। কিন্তু, করোনা সংক্রমণের ভয়ে স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
স্কুলগুলিতে স্বাস্থ্যবিধি কতটা মানা হচ্ছে, কী ভাবে পড়ুয়াদের ক্লাসরুমে বসানো হয়েছে তাও জেলার প্রায় প্রতিটি স্কুল ঘুরে দেখেন জেলার বিদ্যালয়ের পরিদর্শকেরা। উঁচু ক্লাসের জন্য স্কুল খুলে দেওয়া হলেও এখনই নীচুক্লাসের জন্য স্কুল খোলার পক্ষপাতি নন শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁদের মতে, “কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাত্রছাত্রীদের নির্দিষ্ট শ্রেণি কক্ষে বসানোর জন্য জেলার বিদ্যালয়গুলিতে যথেষ্ট শ্রেণিকক্ষ ও পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষিকার অভাব রয়েছে। তাই এখনই নীচু শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কুলের দরজা না খোলাই ভাল।”