ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সর্বসমক্ষে সম্মানহানির অভিযোগ তুলে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মানস মাইতি। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ই-মেল করে এই অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, গত ৮ জুনের একটি কোভিড সংক্রান্ত বৈঠকে উপস্থিত থেকে উপাচার্য উপস্থিত অধ্যাপকদের বিরুদ্ধে বিরূপ ও কুরুচিকর মন্তব্য করতে থাকেন। প্রশ্ন তোলা হয় তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পারিবারিক সংস্কার নিয়েও। এমনকি মানসবাবুকে নাম ধরে সরাসরি আক্রমণও করেন। সেই অবস্থায় মানসবাবু তাঁর বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় এক অধীনস্থ আধিকারিককে দিয়ে তাঁকে বৈঠক থেকে বার করে দেওয়া হয়। মানসবাবুর অভিযোগ, “বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মহাশয়ের এরূপ বক্তব্য এবং এরূপ কার্যকলাপের ফলে আমার ভীষণভাবে সম্মানহানি হয়েছে। তিনি সজ্ঞানে, ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে এবং আমার সহকর্মী অধ্যাপকদের লোকচক্ষে, সাধারণভাবে জনমানসে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এরূপ বক্তব্য রেখেছেন, তা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারি।” গোটা ঘটনার দু’টি অডিও ক্লিপও ৮ জুন প্রকাশিত হয়, আর এ দিন তারই ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের হল। যদিও প্রকাশিত অডিও ক্লিপের সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি।
বিশ্বভারতীর পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মানস মাইতি এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এই বিরোধ যদিও নতুন কোনও ঘটনা নয়। এ বছরের মার্চ মাসের শুরুতেই একটি অনলাইন ও একটি অফলাইন বৈঠকে মানসবাবুকে হুমকি ও অপমান করার অভিযোগ ওঠে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। তখনও সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ মার্চ শান্তিনিকেতন থানায় উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মানস মাইতি, এ দিন আবারও সেই পথেই হাঁটলেন তিনি। গোটা ঘটনায় মানসবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএ। তাঁদের বক্তব্য, “অধ্যাপক, কর্মী বা আধিকারিকদের এভাবে লাগাতার ব্যক্তিগত আক্রমণের ঘটনা উপাচার্য ঘটিয়েই চলেছেন৷ মানসবাবু তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় আমরা অত্যন্ত খুশি। আশা রাখি আগামীতে অন্যরাও মুখ খুলবেন। ভিবিইউএফএ সমস্ত প্রতিবাদীদের পাশে দাঁড়াবে। আমরা ভবিষ্যতে বৃহত্তর প্রতিবাদেরও পরিকল্পনা করছি।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি রাত পর্যন্ত।