ফাইল চিত্র।
হাতে গোনা চার দিন। ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। সে ব্যাপারে চূড়ান্ত তৎপরতা চলছে প্রশাসনের অন্দরে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন এবং বিভিন্ন ধরনের সংশোধন, সংযোজন এবং বিয়োজনের জন্য অনলাইন ও অফলাইনে যে সব আবেদন পত্র জমা পড়েছে, সেগুলির প্রক্রিয়াকরণ চলছে। জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক মৌমিতা গোদার বসু জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনপত্রের সিদ্ধান্ত নেওয়া, প্রক্রিয়াকরণ আছেই। তা ছাড়া খসড়া ভোটার তালিকায় যে সব ত্রুটি দেখা গিয়েছে তা সংশোধন করে ত্রুটি মুক্ত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ৭ফেব্রুয়ারি।
ভোটার তালিকা সংশোধন এবং আঠারো উত্তীর্ণ হলেই হবু ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্তিকরণ— এটা ধারাবাহিক পদ্ধতি। কিন্তু, এ বার চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের প্রতি আলাদা আকর্ষণ রয়েছে ভোটারদের। এনআরসি আতঙ্কই হোক বা অন্য কারণ নিজের ব্যক্তিগত নথি ক্রটি মুক্ত রাখতে এ বারই আবেদনের বহর সবচেয়ে বেশি ছিল জেলায়। অন্তত ন্যাশানাল ভোটার্স ডে-তে দেওয়া জেলা প্রশাসনের তথ্য সেই কথাই বলছে। ভোটার তালিকায় নাম তোলা, সংশোধন বিয়োজন এর জন্য আবেদনপত্র পূরণে পাশের জেলা মুর্শিদাবাদ বা দুই চব্বিশ পরগণা এই তালিকায় উপরের দিকে থাকলেও পিছিয়ে নেই বীরভূম।
গত বছর নির্বাচন কমিশন ভোটারদের তথ্য যাচাইয়ের অনলাইন কর্মসূচি নিয়েছিল। নির্বাচন কমিশন চেয়েছিল ভোটাররা নিজেদের তথ্য নিজেরাই যাচাই করুন। তাতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম। পাশাপাশি, ভোটাররাও সচেতন হবেন। গত বছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩০ নভেম্বর শেষ হয়। সচেতনতার অভাব ও দুর্বল পরিকাঠামোয় ভোটারদের তথ্য যাচাইয়ে অসুবিধার পরেও ৮ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪৫১টি বিভিন্ন ফর্ম জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৬ নম্বর ফর্ম ছিল ১৩,৮১৬টি। ৭ নম্বর ফর্ম ১ হাজার ৪১০টি। অবাক করার বিষয় হল, সংশোধনের জন্য ৮ নম্বর ফর্ম জমা পড়েছিল ৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৭৮৫টি। ফর্ম ৮ (ক) ছিল ১.৫৬৫টি। তার মধ্যে ৪.৭৫, ০৫১টি আবেদন পত্র গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রশাসন জানিয়েছে, গৃহীত আবেদন পত্র যাচাই করে সংশোধিত ভোটার কার্ড সংশ্লিষ্ট ভোটারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
তার পরও ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সময় দেয় দেয় নির্বাচন কমিশন। যাতে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি যাঁদের বয়স ১৮ বছর ছুঁয়েছে, অথচ ভোটার তালিকার নাম তুলতে পারেননি তেমন ভোটারদের নাম তোলার ও অন্য ভোটার যাঁদের ভোটার কার্ড সংশোধনের, বিয়োজনের প্রয়োজন। পরবর্তীতে যে সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় কালে অফলাইনে আবেদনের সংখ্যাও বিশাল সংখ্যক। মোট ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৭০০টি আবেদন পত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে ৬ নম্বর ফর্ম জমা পড়ে ৮৫ হাজার ৮২৫টি। ৭ নম্বর জমা পড়ে ১৭,৩৭৫টি। এক্ষেত্রেও উল্লেখ করার মতো বিষয় হল সংশোধনের জন্য ৮ নম্বর ফর্ম জমা পড়ে ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ১২১টি। ফর্ম ৮ (ক) ছিল ১০ হাজার ৩৭৯টি। এ ছাড়া অনলাইনে এনভিএসপির মাধ্যমে মোট ৩৯ হাজার ৫৩৮টি আবেদন জমা পড়ে।
নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে জমা পড়া আবেদন পত্রগুলির উপরে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেগুলির সামগ্রিক প্রতিফলন ভোটার তালিকায় দেওয়ার কাজ এখনও চলছে। কারণ, অনেক ভুল ক্রটি থেকে গিয়েছিল। জেলাশাসক জানিয়েছেন, ভোটার ও নাগরিকদের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে জেলায় বর্তমানে ৭০টি ভবিষ্যতের ভোটারদের জন্য এবং নতুন ভোটারদের জন্য ৪৮টি ভোটার সাক্ষরতা সঙ্ঘ বা ইএলসি এবং ৬৪টি নির্বাচনী পাঠশালা চালু হয়েছে।