শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের প্রতিবাদ। ছবি এএনাই।
মাসখানেক আগেই গ্রামের এক তরতাজা যুবককে তাঁরা হারিয়েছেন। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আবারও গ্রামেরই পাঁচ বছরের এক নিষ্পাপ শিশুকে হারালেন মোলডাঙাবাসী। এই পরিস্থিতিতে উৎসবেও যেন বিষণ্ণতার সুর নেমে এসেছে গোটা গ্রামে। তাই এ বার কেবল নিয়ম রক্ষার্থেই পুজোর আয়োজন করা হবে বলে জানালেন গ্রামের দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তারা। যে দু’জনকে গ্রাম হারিয়েছে তাদের ছবি রেখে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। পুজো উপলক্ষে সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও এ বার বন্ধ রাখা হবে।
শান্তিনিকেতন থানার মোলডাঙা গ্রামে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে কোনও দুর্গাপুজো না হওয়ায় পুজোর কয়েকটা দিন গ্রামবাসীদের সকলের মন বিষণ্ণ থাকত। তাই গত বছর থেকে স্থানীয় কিছু গ্রামবাসী মিলে মোলডাঙার দুর্গানগরে একটি দুর্গাপুজোর উদ্যোগ নেন। পুজোর নাম দেন মোলডাঙা দুর্গানগর সর্বজনীন দুর্গাপুজো।
প্রথম বছর পুজোটি বেশ জাঁকজমক করেই পালন করা হয়। এ বারও তেমনই পুজোর মাস দুয়েক আগে থেকেই নেওয়া হচ্ছিল প্রস্তুতিও। কিন্তু কিছুদিন আগে বাজ পড়ে ওই পুজো কমিটির সদস্য মিঠুন সর্দার নামে গ্রামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর ওই গ্রামেরই বাসিন্দা পাঁচ বছরের শিশু শিবম ঠাকুরের বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয় প্রতিবেশীর ছাদ থেকে। সেই ঘটনার পর থেকেই উৎসবের পরিবেশ উধাও এলাকা থেকে। আনন্দ ম্লান হয়ে গিয়েছে। তাই জাঁকজমকের বদলে নিয়ম রক্ষার্থেই এ বার পুজো করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আয়োজকেরা।
পুজোর আয়োজনেও বিস্তর কাটছাঁট করা হয়েছে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কাজল বাউরি, রঞ্জিৎ প্রামাণিক, মঞ্জন বাউরিরা জানান, গ্রামে দীর্ঘদিন কোনও দুর্গাপুজো না হওয়ায় তাঁরা কয়েকজন মিলে গত বছর থেকে এই পুজো শুরু করেন। এ বছর তাঁদের ইচ্ছে ছিল ভাল করে পুজো করার। পরপর গ্রামে এমন অঘটন ঘটে যাওয়ায় প্রথমে পুজো বন্ধের কথাও ভাবেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘সমস্ত কিছুর আয়োজন করে ফেলায় এ বছর আমরা নিয়মরক্ষার্থে পুজো করব।’’