দুর্যোগের আশঙ্কায় মাঠে রাখা কাটা ধান বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যস্ততা। সিউড়ির বাতাসপুর গ্রামের খেতে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টিপাতের তাণ্ডবে নষ্ট হতে পারে মাঠের পাকা ধান। সেই ভাবনা থেকেই রবিবার মাঠের ধান ঘরে তোলার তৎপরতা দেখা গেল মাঠে মাঠে। যাঁদের ধান এখনও সেভাবে পাকেনি, তাঁরা যদিও ঝড়ের আশঙ্কা মাথায় রেখেও মাঠের ধান মাঠেই রাখছেন। যদিও সেই সংখ্যাটা খুব একটা বেশি নয়।
জেলার অধিকাংশ জমিতেই ইতিমধ্যে ধান কাটার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ধান কেটে মাঠের আলেই ফেলে রেখেছিলেন কৃষকরা। কিন্তু বৃষ্টি হলে সেই কেটে রাখা ধান পচে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকায় এ দিন তড়িঘড়ি ধান ঘরে তোলার কাজ শুরু করলেন তাঁরা। গত কয়েকদিন আকাশে একেবারেই মেঘের দেখা পাওয়া যায়নি। চড়া রোদে খরার পাকা ধান কাটা সুবিধাজনক বলে জেলার অধিকাংশ জমিতেই ধান কাটার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে।
কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ বার প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ জমিতেই ধান কাটার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে৷ ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আসার পূর্বাভাস পাওয়ার পরেই বাকি জমি থেকেও দ্রুত পাকা ধান তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় কৃষি দফতরের তরফ থেকে৷
খটঙ্গা পঞ্চায়েতের তারাপুর এলাকার চাষি তপন পাল দিন কয়েক আগেই পাকা ধান কেটে মাঠের ধারে রেখেছিলেন৷ এ দিন তড়িঘড়ি নিজের মেয়ে উমাকে সঙ্গে নিয়ে সেই ধান আঁটি বেঁধে গরুর গাড়িতে চাপিয়ে ঘরে নিয়ে যান তিনি৷ তপন বলেন, “জমির ধানে বৃষ্টি হলে খুব ক্ষতি হবে না৷ কিন্তু কেটে রাখা ধান জলে ডুবলে একেবারে পচে যাবে৷ তাই যেটুকু ধান কাটা হয়েছে, সেটাই আগে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছি।” তপনও জানান, জমির ধান প্রায় সব চাষিই তুলে নিয়েছেন৷ তাই ঝড় বৃষ্টি হলেও বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না।
তবে এ বার অনেকেই বেশ খানিকটা দেরিতে খরার ধান লাগিয়েছিলেন। তাঁদের ধান এখনও সম্পূর্ণ পেকে ওঠেনি। তাঁরা অনেকে মাঠেই ধান রাখছেন। সিউড়ি ১ ব্লকের এমনই দুই চাষি গোলাম মোস্তাফা এবং শেখ সালেম বলেন, “আমাদের ধান এখনও পুরোপুরি পাকেনি। এখন এই ধান কেটে নিলে বিশেষ লাভ হবে না। চারদিকে খোঁজ নিয়ে যা শুনলাম, তাতে বীরভূমে ঝড় খুব বেশি হবে বলে মনে হয় না। আর এই অবস্থায় বৃষ্টি হলে বিশেষ সমস্যা নেই। তাই ধান মাঠেই রাখছি।”