সম্বল: বিকাশবাবুর ছবি নিেয় তাঁর পরিজনেরা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
ছ’বছর কাটার পরেও মেলেনি সরকারের আর্থিক সাহায্য কিংবা প্রতিশ্রুত চাকরি। মাওবাদীদের সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত পাড়ুইয়ের বাসিন্দা বিকাশ সূত্রধরের পরিবার এখনও তাকিয়ে সেই কথা কবে রাখা হবে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে সিআরপিএফ-এ যোগ দেন পাড়ুই থানার বনশঙ্কা গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ সূত্রধর। ২০১২ সালে মাওবাদী দমনে কাজ করা মেদিনীপুর কোবরা বাহিনীতে যুক্ত হন। তার ঠিক এক বছর পরে ২০১৩ সালে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন পরে ফের মেদিনীপুরে কাজে যোগ দিতে চলে যান বিকাশ। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হন বিকাশ।
বিকাশের অকাল-মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিল গোটা গ্রাম। সেই সময় সরকারের তরফে নিহতের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ও পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সেই সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু, আজ পর্যন্ত কিছুই মেলেনি বলে পরিবারের দাবি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত জওয়ানের মৃত্যুর পরে স্ত্রী ইতি সূত্রধর বহুবার চাকরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী-সহ জেলাশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। কোনও লাভ হয়নি তাতেও।
এখন শ্বশুর, শাশুড়ি ও এক সন্তানকে নিয়ে সংসার। বিকাশের বাবা আগে কাঠের কাজ করতেন। বয়সের ভারে এখন আর সেটা করতে পারেন না। তেমন জমিজায়গাও নেই। চাকরির পেয়ে দোতলা বাড়ি করেছিলেন। কিন্তু, একটা মৃত্যু এক লহমায় সব শেষ করে দেয়।
এখন বিকাশের পেনশনের টাকাতেই কোনও রকমে সংসার চালাচ্ছেন ইতিদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘এই অবস্থায় আমরা চাই সরকার যদি আমাদের কিছু আর্থিক সাহায্য ও একটি চাকরির ব্যবস্থা করে তা হলে ভাল হয়।’’ তাঁদের সমস্যার কথা আশার কথা শুনিয়েছেন বিডিও (সিউড়ি ২) শেখ আবদুল্লা। তিনি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ডেকে কথা বলে সমস্ত কাগজ নেওয়া হয়েছে। সমস্ত বিষয়টা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’